ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫ - ২:৫৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাকসু নির্বাচন: ভোটগ্রহণ ১৭ কেন্দ্রে, নিরাপত্তায় থাকবে ২ হাজার বাহিনী

  • আপডেট: Tuesday, September 16, 2025 - 11:02 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০ বুথে অনুুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ শেষে রাকসু কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে ভোট গণনা এবং কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কমপক্ষে দুই হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাকসু নির্বাচন কমিশনার, প্রক্টর ও রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রের ভবনগুলো হলো- মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ কলা ভবন, সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন, জাবির ইবনে হাইয়ান একাডেমিক ভবন, জামাল নজরুল একাডেমিক ভবন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবন, জগদীশ চন্দ্র একাডেমিক ভবনে ২ টি করে কেন্দ্র এবং জুবেরী ভবনে ১ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ নেওয়া হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৯টি ভবনের ১৭ টি কেন্দ্রে নেওয়া হবে। এসব কেন্দ্রে ৯৯০ টি বুথ স্থাপন করা হবে। ভোট গণনা করা হবে রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে। ভোট গণনার পুরো সময়টি সিসি টিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত থাকবে।’

নিরাপত্তার ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তায় আমাদের গোয়েন্দা দল কাজ করছে। যেহেতু ক্যাম্পাসের আয়তন অনেক বেশি। আমরা সেন্ট্রাল কেন্দ্রিক একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবো। ভোট গণনার জায়গাগুলো আমরা দেখছি এবং কোন জায়গায় কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সেটি পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচনের দিনে আমাদের প্রায় দুই হাজার সদস্য ক্যাম্পাসে কাজ করবে।’

নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে তিন স্তরের। প্রথমত, ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা দেওয়া, দ্বিতীয়ত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা দেওয়া এবং সবশেষে পুরো ক্যাম্পাসে কেউ পরিচয়পত্র ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না।’

এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে একটি প্রেস কর্ণারের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘রাকসু নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নির্বাচন নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন এবং নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে দেশবাসীর প্রবল কৌতূহল রয়েছে। এ কৌতূহল মেটাতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের মাধ্যমেই সারা দেশ জানতে পারবে নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে এবং নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে। মিডিয়া সেন্টারে ইন্টারনেট সংযোগসহ সকল প্রয়োজনীয় সুবিধা রাখা হয়েছে।’
বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলছে প্রচারণা

রাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনভর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। আবার কেউ কেউ লিফলেট ছাপাতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। গত রোববার বিকেলে ব্যালট নম্বর বরাদ্দ এবং রাতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে ওইদিন বিকেল থেকে বৃষ্টি থাকায় প্রচারণায় নামতে পারেননি প্রার্থীরা।

আনুষ্ঠানিক প্রচারণার দ্বিতীয় দিন গত সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। থেমে থেমে বৃষ্টি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রচারণায় নামে প্রার্থীদের অনেকে। তাঁরা টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেট, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনের ভ্রাম্যমাণ খাবার ও চায়ের হোটেলের ছাউনিতে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচার চালান।

ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ এর ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ সকাল থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরে প্রচার চালাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি, জিএস, এজিএসকেও ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় প্রচারণা চালিয়েছেন। একইসঙ্গে আরও বেশকয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা প্রচার চালিয়েছেন।

প্রচারণা করার একপর্যায়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ এর ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন না হওয়ার পরও যারা আমাদের সমালোচনা করছে, তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা নিজেদের প্রচারণায় সময় ব্যয় না করে, আমাদের সমালোচনায় সময় ব্যয় করছে। আসলে এতে আমাদেরই একটা প্রচার হচ্ছে। আমরা কাঁধা ছুড়াছুড়ি করতে চাই না। আমরা নিজেদের কাজগুলো করে যেতে চাই। অনেক ছাত্রসংগঠন বিধি লঙ্ঘন করে আগেই লিফলেট বিতরণ করেছে, এটা আমরা নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ করব।’

সোনালী/জগদীশ রবিদাস