ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫ - ২:১৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাকসু নির্বাচন: সমন্বয়ক, নারী ও সংখ্যালঘু নিয়ে ‘ইনক্লুসিভ’ প্যানেল ছাত্রশিবিরের

  • আপডেট: Monday, September 15, 2025 - 10:35 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের মাঠে নতুন সমীকরণ নিয়ে হাজির হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’।

আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোষিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে নারী, সংখ্যালঘু প্রতিনিধি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরিচিত মুখকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল। যদিও সংগঠনটি এটিকে ‘ইনক্লুসিভ’ প্যানেল হিসেবে দাবি করেছে।

তবে এই পদক্ষেপকে শিবিরের নতুন কৌশল হিসেবেই দেখছেন ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন নিজেদের অন্তর্ভুক্তিমূলক হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তেমনি ভোটের জটিল হিসাবেও এগিয়ে থাকার পরিকল্পনা করেছে তারা।

গত ৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা এই প্যানেলকে ইনক্লুসিভ প্যানেল হিসেবে দাবি করেছে। প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তবে সবচেয়ে বড় চমক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে। এ পদে লড়বেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা।

এছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদের প্রার্থী ‘সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সভাপতি সালমান সাব্বির। যার রাজনৈতিক পরিচয়ও অনেককে অবাক করেছে। সালমান যে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তা এই প্যানেল ঘোষণার মাধ্যমেই প্রথম প্রকাশ্যে আসে।

শিবিরের এই প্যানেলে তিনটি নারী পদের পাশাপাশি সহ সমাজসেবা সম্পাদক পদেও একজন নারীকে প্রার্থী করা হয়েছে। নির্বাহী সদস্য পদে রাখা হয়েছে সুজন চন্দ্র নামে সনাতন ধর্মাবলম্বী একজন শিক্ষার্থীকে। এছাড়া, জুলাই আন্দোলনে পুলিশি হামলায় এক চোখ হারানো শিক্ষার্থী দ্বীপ মাহবুবকেও নিজেদের প্যানেলে প্রার্থী করেছে শিবির।

শিবির নেতারা বলছেন, তারা শুধু নিজেদের কর্মী নয়, বরং ক্যাম্পাসের দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন। এই বৈচিত্র্যই তাদের প্যানেলের শক্তি এবং এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্র সংসদ গঠনের বার্তা দেয়।

ভোটের মাঠে জটিল হিসাব-নিকাশ: রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এখন পর্যন্ত প্রায় এগারোটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, শিবিরের বাইরে যত বেশি প্যানেল হবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট তত বেশি ভাগ হয়ে যাবে, যার কৌশলগত সুবিধা পাবে ছাত্রশিবির।

বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্রশিবিরের একটি নির্দিষ্ট ও সংগঠিত ভোটব্যাংক রয়েছে। অন্যদিকে, বামপন্থী, সরকার সমর্থক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্যানেল একই ঘরানার ভোটারদের ভোট ভাগাভাগি করবে। ফলে ভোটের এই জটিল সমীকরণে শিবিরের প্রার্থীরা তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারেন।

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ছাত্রী হলগুলোতে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার প্রভাব। ক্যাম্পাসে আলোচনা রয়েছে, ছাত্রী হলগুলোতে সংস্থাটির একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা নির্বাচনে তাদের নারী প্রার্থীদের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।