আয়ারল্যান্ডে ৭৯৬ নবজাতক সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু

অনলাইন ডেস্ক: আয়ারল্যান্ডের তুয়াম শহরের সেন্ট মেরি মাদার অ্যান্ড বেবি হোমের নিচের সেপটিক ট্যাংকে প্রায় ৭৯৬ নবজাতকের মরদেহ গোপনে ফেলে দেওয়ার দীর্ঘদিনের অভিযোগের তদন্তে অবশেষে খনন কাজ শুরু করেছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘ সময় ধরে পরিবার ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের চাপের মুখে অবশেষে এই খননের অনুমতি দিল সরকার।
সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
১৯২৫ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত বন সেকুর সিস্টারস নামে এক নানদের প্রতিষ্ঠান তুয়ামের এই হোম পরিচালনা করে। ওই সময় ‘অবৈধ সন্তান’ হিসেবে জন্ম নেওয়া শত শত শিশু মারা গেলে, তাদের মরদেহ কোনো প্রকার সৎকার ছাড়াই ট্যাংকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এক সরকারি তদন্তে জানানো হয়েছে, ১৯৬০ সালের আগে এসব হোমে জন্ম নেওয়া ‘অবৈধ শিশুদের’ বাঁচানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হতো না।
প্রতিষ্ঠানটিতে মারা যাওয়া শিশুদের একজন মেরি মার্গারেট, যিনি প্রায় ৮০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার বোন, বর্তমানে ৭১ বছর বয়সী অ্যানেট ম্যাককেই জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে জানতেন যে তার একটি বোন জন্মের পর মারা গিয়েছিল, তবে গণকবরে দাফনের বিষয়টি পরিবারের জানা ছিল না।
অ্যানেট বলেন, ‘আমার মা মৃত্যুর আগে আমাকে জানিয়েছিলেন, তার সন্তানকে বলা হয়েছিল পাপের ফল, এবং মৃত্যুর খবর দিয়ে কোনো কবর বা শেষকৃত্য ছাড়াই তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
তিনি আরও জানান, তার বোনের মরদেহ যাতে সম্মানের সঙ্গে দাফন করা যায়, সেই চেষ্টাই এখন তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। ‘মেরি মার্গারেটের নাম যেন আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে এই লজ্জার অধ্যায়ে ভুলে না যাওয়া হয়, সেই জন্যই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি,’ বলেন অ্যানেট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত শিশুকে তাদের মায়ের অজান্তে দত্তক দেওয়া হতো, বা অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। যারা মারা যেত, তাদের অনেককেই সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখা হতো, এবং পরিবারের কাছে কোনো তথ্য পৌঁছাত না।
এখন পর্যন্ত উদ্ধারকৃত কঙ্কালগুলোকে ডিএনএ পরীক্ষা এবং শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে নিহত শিশুদের সম্মানের সঙ্গে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।