ঢাকা | মে ২৯, ২০২৫ - ২:১২ অপরাহ্ন

‘সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত রয়েছে’- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • আপডেট: Tuesday, May 27, 2025 - 11:40 pm

স্টাফ রিপোর্টার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত রয়েছে। সীমান্তে নিরাপত্তার কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। আমাদের জনগণ ও সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ।

উপদেষ্টা গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৪তম ব্যাচ ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে পুশ-ইন এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা এর প্রতিবাদ করেছি।

যেসব বাংলাদেশি ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদেরকে যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠাতে ভারতকে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকগণ যারা আমাদের দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে, তাদেরকে আমরা যেমন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ফেরত পাঠাই ঠিক তেমনিভাবে আমাদের দেশের নাগরিকদের আমরা সে প্রক্রিয়ায় ফেরত নিতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে যোগাযোগ করছে।

আসন্ন ঈদুল-আজহা উপলক্ষে নিরাপত্তা প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, গত ঈদুল-ফিতর যেমন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সামনের ঈদে যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো থাকে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধানের উৎপাদন প্রায় ১৫ লক্ষ টন বেড়েছে। আলুর দামও কম রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।

তবে সংশ্লিষ্ট সবাই যদি সহযোগিতা করে তাহলে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবে। এসময় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন ও আরএমপি পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ানসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে উপদেষ্টা সকালে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কারা অধিদপ্তরের ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচের কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি সংস্কারমুখী সরকার।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা কারাগারকে একটি সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

উপদেষ্টা বলেন, বন্দিকে অপরাধী নয়, সংশোধনযোগ্য মানুষ হিসেবে দেখা- এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার জন্যই সরকারের পক্ষ থেকে ‘সংশোধনমূলক শিল্পপার্ক’ তৈরিসহ নানাবিধ উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেখানে বন্দিরা প্রশিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনবল হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি জেলে বসেই আয় রোজগারের সুবিধা পাবে এবং পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডেপুটি জেলারগণ কারাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কারা প্রশাসন গঠনে তারাই প্রধান বাহক। উপদেষ্টা এসময় নবীন ডেপুটি জেলার ও কারারক্ষীদের ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতিমুক্ত ভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কারা বিভাগের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার নির্দেশ দেন।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতী নবীন প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে নবীন ডেপুটি জেলার, কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।

এসময় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমান্ড্যান্ট কামাল হোসেনসহ বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলারদের মধ্যে সর্ব বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন খাদিজা খাতুন লিমা ও বেস্ট ফায়ারার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ডিএম নুসরাত আল ইসলাম এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের মধ্যে সর্ববিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন সুব্রত চন্দ্র সরকার ও বেস্ট ফায়ারার খ্যাতি অর্জন করেন রায়হান মিয়া। পরে উপদেষ্টা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS