মোস্তাফিজ হতে পারবেন পেসার শরিফুল?

অনলাইন ডেস্ক: দলে আরও বাড়তি পেসার আছেন। তার মত বাঁ-হাতি শরিফুল ইসলামও আছেন। তারপরও উঠেছে প্রশ্ন, আজ রাতে আরব আমিরাতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের জায়গা পূরণ করতে পারবেন শরিফুল ইসলাম? টিম বাংলাদেশ কি সোমবার বাঁ-হাতি মোস্তাফিজকে মিস করবে না? আরেক বাঁ-হাতি শরিফুল কি মোস্তাফিজের ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন?
দুজনই বাঁ-হাতি। শরিফুল একটু জোরের ওপর বল করেন। তবে বাড়তি গতি সঞ্চার করতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে লাইন লেন্থ হারিয়ে ফেলেন। আর মোস্তাফিজ তুলনামূলক নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। বাড়তি গতি সঞ্চারের বদলে মাঝে-মধ্যে স্লোয়ার ছোঁড়াই তার প্রধান বৈশিষ্ট্য। গতি বৈচিত্র্যের পাশাপাশি কাটার ছুঁড়ে মাঝে-মধ্যে প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে বিভ্রান্ত করা, বোকা বানানোর কাজটা মোস্তাফিজ ভাল পারেন।
তাই বলে শরিফুলকেও খাট করে দেখার উপায় নেই। তুলনামূলক লম্বা ও সুঠামদেহী শরিফুলের বলে বাড়তি গতি ও বাউন্স ছাড়া ম্যুভমেন্টও আছে। বাঁ-হাতি বোলারদের কৌনিক ডেলিভারি, যেটা ডানহাতি ব্যাটারদের জন্য একটা কোণ তৈরি করে- ক্রিকেটীয় পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘অ্যাঙ্গুলার ডেলিভারি’; সেটাও শরিফুলের ভাল হয়।
এর বাইরে মাঝে-মধ্যে কিছু এক্সপ্রেস ডেলিভারি ছোঁড়ার ক্ষমতা আছে মোস্তাফিজের। যা দিয়ে সাফল্যও পান বেশ। অন্যদিকে মোস্তাফিজের প্রধান নির্ভরতা কাটার, স্লোয়ার। উইকেট থেকে সহায়তা পেলে বিশেষ করে উইকেটে বল ‘গ্রিপ’ করলে একটু থেমে থেমে আসলে মোস্তাফিজের ‘পোয়াবারো’। তখন তার কাটার ও স্লোয়ার সামলানো দায় হয়ে পড়ে ব্যাটারদের জন্য।
পরশু শারাজাহর মাঠের পিচে বল থেমে আসেনি। এক চুলও গ্রিপ করেনি। বরং খেলা হয়েছে শতভাগ ব্যাটিং উপযোগি পরিবেশে। ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে। কিন্তু সেখানেও খুব ভাল জায়গায় অনেক নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ। কোনোরকম বাড়তি পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালানোর চেষ্টা না করে লাইন ও লেন্থ ঠিক রেখে বল করেছেন।
বাংলাদেশের বাকি বোলারদের বিপক্ষে স্বচ্ছন্দে খেললেও মোস্তাফিজের মাপা বোলিংয়ের বিপক্ষে হাত খুলে খেলতে পারেননি একজন আমিরাত ব্যাটারও। ম্যাচের সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত ও সমীহ জাগানো স্পেলটিই ছুঁড়েছেন মোস্তাফিজ। প্রথম ২ ওভারে ১১ রানে ১ আর পরের স্পেলে ১৬ ও ১৮ নম্বর ওভারে যথাক্রমে ৩ ও ৪ রান দিয়ে বাংলাদেশের ২৭ রানের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মোস্তাফিজ।
যারা খেলা দেখেছেন, তারা সবাই একমত মোস্তাফিজ ‘ডেথ ওভারে’ এমন মাপা বোলিং না করলে বাংলাদেশের জেতা কঠিন হতো। কারণ, একপর্যায়ে শেষ দিকে ৬ উইকেট হাতে থাকা অবস্থায় আরব আমিরাতের দরকার ছিল ৬০ রানের। ক্রিজে ছিলেন মারকুটে ব্যাটার আসিফ খান। বাংলাদেশের বাকি বোলারদের খুব স্বচ্ছন্দে ইচ্ছেমত উড়িয়ে মেরেছেন আসিফ।
কিন্তু মোস্তাফিজকে পারেননি। চার ও ছক্কা হাকানো বহুদুরে ১৬ ও ১৮ নম্বর ওভারে মোস্তাফিজের বল থেকে একটি ডাবলসও নিতে পারেননি আসিফ খান। এ আমিরাত ব্যাটারের বিপক্ষে ৭ বলে মাত্র ৩ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ। অথচ অপর পেসার হাসান মাহমুদের করা ১৭ নম্বর ওভারের প্রথম ২ বলে একটি করে ছক্কা ও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশ শিবিরকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন এই ব্যাটার।
কাজেই সোমবারের ম্যাচের আগে মোস্তাফিজের কথাই মনে করছেন ভক্ত ও সমর্থকরা। বোঝাই যায়, দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলতে চলে যাওয়া মোস্তাফিজের বদলে সোমবার রাতে হয়ত শরিফুলকে খেলানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট। সেই সঙ্গে জাগছে প্রশ্ন, মোস্তাফিজের মত শরিফুল কি আসিফ খানদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখতে পারবেন?