পবায় গভীর নলকূপ দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: পবায় গভীর নলকূপ জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বরইকুড়ি-২ গভীর নলকুপে।
বাগসারা গ্রামের মুন্তাজ আলীর ছেলে সোহেল রানা জোর করে ডিপ অপারেটরের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে যে কোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এঘটনার সুষ্ঠু প্রতিকার পেতে নারী ডিপ অপারেটর জুলেখা খাতুন বিউটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, বাগসারা গ্রামে বরইকুড়ি-২ গভীর নলকুপটি বরইকুড়ি জেএল নং ৯৯, দাগ নং ২-এ স্থাপন (বসানো) করা হয়। গভীর নলকুপটি নিয়োগপ্রাপ্ত অপারেটর জুলেখা খাতুন বিউটির নামীয় জমিতে অবস্থিত। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভুক্তভোগি জুলেখা খাতুন বিউটির মা অপারেটরের দায়িত্ব পালন করে।
২০০৪ সাল হতে ভুক্তভোগি জুলেখা খাতুন বিউটি নিষ্ঠার সাথে অপারেটরের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পুনরায় নবায়ন করা হয়। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগপত্রও দেন। কিন্তু স্থানীয় সোহেল রানা জোর করে ডিপের ঘরে প্রথমে তালা দেন। এরপর থেকে সোহেল রানা জোর করে ডিপটি পরিচালনা করছেন।
বরইকুড়ি-২ গভীর নলকুপ এর অধিনে সর্বোচ্চ জমি চাষ করেন কৃষক মো: ফজর আলী। তিনি বলেন, এই গভীর নলকুপের অধিনে প্রায় দুইশত বিঘা জমি আছে। আগে গভীর নলকুপে অপারেটর ছিল ওয়াহাব আলীর স্ত্রী। তিনি প্রায় ২৫-৩০ বছর যাবত গভীর নলকুপ অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকার পরিবর্তনের পরবর্তীতে নিয়োগ পেয়েছেন জুলেখা খাতুন বিউটি। কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন সোহেল রানা। আগেও ঠিকমত জমিতে পানি পেয়েছি এখনও পাচ্ছি। কোন সমস্যা হয়নি আমরা কৃষকরা ঠিকমত ক্ষেতে পানি পেলেই খুশি। তবে নিয়োগপ্রাপ্ত আছে একজন কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন আরেকজন এই সমস্যার সমাধান জরুরি প্রয়োজন।
স্বঘোষিত ডিপ অপারেটর সোহেল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ডিপের অপারেটর হিসেবে তিনজন পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অপারেটর হিসেবে কোন ডকুমেন্টস আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার কাছে লিখিত কোন ডকুমেন্টস নাই। আমার পিছনে আরোও লোক আছে।
নিয়োগপ্রাপ্ত ডিপ অপারেটর জুলেখা খাতুন বিউটির পক্ষে তার স্বামী শাহিন বলেন, ১৯৯৪ সালে ডিপটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে আমার শ্বাশুড়ি এই ডিপের অপারেটর ছিলেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোন কৃষক আমার শ্বাশুড়ি ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেননি। ৫ আগস্টের পরে নতুন করে ইস্যু তৈরী করে মিথ্যা কথা বলছেন তারা।
তাছাড়া কর্তৃপক্ষ সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করেই তো আমার স্ত্রীকে অপারেটরের দায়িত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে সোহেল রানা জোর করে ডিপটি দখলে রেখেছেন। তার মাটির ওপর অবস্থিত ডিপের অপারেটরের দায়িত্ব ফিরে পেতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিয়োগপ্রাপ্ত ডিপ অপারেটর জুলেখা খাতুন বিউটি।
পবা উপজেলা বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, বরইকুড়ি-২ ডিপ অপারেটর হিসেবে জুলেখা খাতুন বিউটি এক বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত। সোহেল রানা নামে একজন জোর করে অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন।
পবা থানার এসআই তদন্ত কর্মকর্তা ইকরামুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ডিপ কর্তৃপক্ষ বিএমডিএ। ডিপ অপাররেটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন একজন কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন আরেকজন। বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাক্তিকে ডিপ বুঝিয়ে দেয়নি। এ বিষয়ে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।