ঢাকা | নভেম্বর ২৬, ২০২৪ - ১১:১৮ অপরাহ্ন

ঈদযাত্রায় ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ

  • আপডেট: Sunday, April 17, 2022 - 6:10 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: ঈদযাত্রায় চাপ কমানো এবং দুর্ঘটনা রোধে ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান।

তিনি বলেন, ‘২৫ রোজার পরে সবাই একসঙ্গে বাড়িতে না গিয়ে পরিবারের যে সদস্যরা কাজ করে না তাদেরকে আগে পাঠিয়ে দিন। সবাই একসঙ্গে গিয়ে বিপদে পড়ার চেয়ে ধাপে ধাপে লোক পাঠালে সেই চাপ কিছুটা কমবে।’

রবিবর সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিছায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা’ বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন।

হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ঈদের চার দিনে প্রায় এক কোটির বেশি মানুষ ঢাকা থেকে বের হন। ওই চার দিনে ঢাকা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখ লোক বের হন। কিন্তু ঢাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহণের মাধ্যমে যাত্রী বহনের সক্ষমতা অর্ধেকেরও কম। যে কারণে বাকি অর্ধেক মানুষ বাড়ি যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ ট্রেনের ছাদে, কেউ মোটর বাইকে, কেউ বাসের ছাদে আবার কেউ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে আরোহণ করেন। এর ফলে ঘটে দুর্ঘটনা।’

পরিবহণ সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন মানুষ রাস্তায় নেমে পড়লে সড়কে কোনো ব্যবস্থাই কাজে আসে না বলে মনে করেন বুয়েটের এই শিক্ষক।

তিনি বলেন, ‘একত্রে এত মানুষ রাস্তায় নামলে ট্রাফিক পুলিশ যত ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন সেটা আর কাজে আসে না। ফর্মাল ওয়েতে আমাদের পরিবহণ সক্ষমতা ১৩ থেকে ১৪ লাখ। কিন্তু যাত্রী ৩০ লাখ। বাকি ১৬ লাখ মানুষ তো কোনো না কোনোভাবে বাড়ি যাবেই। কিন্তু তাদের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা নেই।’

রাজধানী থেকে পরিবহণ সক্ষমতার একটি চিত্র তুলে ধরে হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক পরিবহণে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী পরিবহণের সক্ষমতা রয়েছে, নৌ পথে দেড় লাখ, ট্রেনে প্রতিদিন পরিবহন করতে পারে এক লাখ যাত্রী, ব্যক্তিগত পরিবহণে চার লাখ। এই সাড়ে চৌদ্দ লাখের বেশি পরিবহণের সুযোগ নেই। এছাড়া রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে আরও চার লাখ লোক ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করে।’

ফলে ঈদে সময়ের এই চাপ কমানোর জন্য বিকল্প কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন হাদিউজ্জামান। এর মধ্যে ২৫ রোজার পরে সবাই একসঙ্গে বাড়িতে না গিয়ে ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার কথা বলছেন তিনি। বিশেষ করে পরিবারের যারা কোনো কাজে নেই তাদের আগেভাগে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া। তাহলে পরিবহনে বাড়তি চাপ কিছুটা কমবে।

এদিকে এবার ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে বলে মনে করছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘করোনা মুক্তির কারণে এবারের ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। এবার ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে।’

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় ভরাবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এবার রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে।’

তাই এখন থেকেই রাজধানীর সব পথের ফুটপাত রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার দাবিসহ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।