রাবি র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের একদল সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একই বিভাগের অনুজ দুই শিক্ষার্থীকে হেনস্তা (র্যাগ) করার অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির জরুরি সভায় চার সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক দিল আরা হোসেন।
গত শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ছাদে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একদল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অনুজ দুই শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পরদিন সন্ধ্যায় হেনস্তার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ও তাঁদের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি তদন্তের জন্য শিক্ষার্থীদের নিজ বিভাগের সভাপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল একাডেমিক কমিটির সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে হেনস্তার শিকার দুই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, তাঁদের কয়েকজন বন্ধুকে ডেকে নিয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর সামনে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে মানসিকভাবে নির্যাতন করে ওই সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করে গালিগালাজ করে। এরপর তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে।
সেই সঙ্গে তাঁদের দিয়ে অশ্লীল কবিতা আবৃত্তি করার পাশাপাশি কুকুরের মতো হয়ে যৌন অঙ্গভঙ্গি দেখানোর জন্য বাধ্য করে। এতে তাঁরা অনাগ্রহ প্রকাশ করলে তাঁদের মা-বাবা তুলে গালিগালাজ করে, যা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের জন্য চরম অবমাননাকর। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী, গোলাম রাব্বী, মাহাবুব হোসেন, মেহেদী হাসান, শাহ পরান ও শাহাদাত হোসেন।
এ ছাড়া ঘটনার সময় তাঁদের ব্যাচের ২০ থেকে ২৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন একই বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আবদুল্লাহ শেখ ও মেজবাহ দেওয়ান।
তদন্ত কমিটির ব্যাপারে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক দিল আরা হোসেন বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় প্রক্টর দপ্তর থেকে বিভাগে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির একটি জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে চার শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কমিটির সদস্যদের নাম না প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।