ঢাকা | মে ৭, ২০২৫ - ৩:৫১ পূর্বাহ্ন

অগ্নিদগ্ধ সন্তানকে বাঁচাতে এক মায়ের আঁকুতি!

  • আপডেট: Tuesday, May 6, 2025 - 9:15 pm

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: চিকিৎসার অভাবে দিন দিন মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে আমার দুই বছর বয়সী শিশু বনি ইসরাইল। মা হয়ে কেমন করে এ যন্ত্রণা সহ্য করি।

কিন্তু অর্থাভাবে করার কিছুই নাই। কেউ কি আছেন একটু সাহায্যের হাত বাড়াতে। আপনার দেয়া একটু সাহায্য সহযোগিতায় ছেলে আমার ফিরে পেতে পারে মায়ের কোল।

কান্নায় ভেঙে পড়ে কোলের সন্তানকে বাঁচাতে এমন আঁকুতির কথাগুলোই বলছিলেন নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ইকরাপাড়া গ্রামের ফায়েমা নামের এক শিশু সন্তানের মা। ফায়েমা ওই গ্রামের আবু সাঈদের স্ত্রী ও গোল মোহাম্মদের মেয়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট চালাঘরে নিচে শিশু বনি ইসরাইলকে কোলে নিয়ে বসে আছেন মা ফায়েমা বেগম। শিশুটি তার পোড়া শরীরের ক্ষতের যন্ত্রণায় কাঁদছে অনবরত। তার হাত-পাঁ থেকে খসে পড়েছে চামড়া ও মাংশ।

চামড়ার নিচের রগ বেরিয়ে এসেছে ভিতর থেকে। হাত পাঁ বাঁকা হয়ে গেছে। ক্ষতের জ্বালা যন্ত্রণায় ঠিকমত খেতে না পারায় ক্ষীন হয়ে গেছে শরীর। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চরম উৎকন্ঠা পরিবারের সদস্যদের।

আলাপচারিতায় জানা যায়, সাঈদ-ফায়েমা দম্পতির দুই ছেলে। বড় ছেলে ইমাম প্রাক-প্রাথমিকে পড়ে। আর ছোট ছেলে বনি ইসরাইল দু’বছর পেরিয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে দুর্ঘটনার দিন বাড়ির উঠানে বড় ভাই ইমামের সাথে খেলা করছিলো বনি ইসরাইল।

খেলার মধ্যে পাশে থাকা একটি ধান সিদ্ধ করার চুলাই পড়ে যায় সে। চুলার ভিতর আগুনের কয়লা থাকায় তার হাত-পাঁ ঝলসিতে থাকে। চেষ্টা করেও উঠতে পারছিলোনা সে। অতঃপর তার চিৎকারে পরিবারের লোকজন ছুটে এসে তাকে চুলার ভিতর থেকে উদ্ধার করে।

কিন্ত এ সময়ের  মধ্যেই তার চার হাত-পাঁ পুড়ে ঝলসে যায়। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে ৩০ দিন চিকিৎসার মধ্যে একটি অপারেশন হয়।

পর্যায়ক্রমে ৪/৫টি অপারেশনের জন্য আরও ৯০ দিন থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক ওষুধ কিনার টাকা ও আরও দীর্ঘ সময় (তিনমাস)  রোগীকে নিয়ে থাকার সামার্থ না থাকায় অগ্নিদগ্ধ শিশুটিকে নিয়ে মনোকষ্টে  গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন বাবা-মা। বর্তমানে বিনা চিকিৎসায় শিশুটির অবস্থা ভয়ঙ্কর অবনতির দিকে।

কথা হয় শিশুটির মা ফায়েমা বেগমের সাথে। তিনি জানান, স্বামী দিন মজুর। কৃষিকাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। শিশু সন্তানের এমন দুর্ঘটনায় চিকিৎসা বাবদ সর্বস্ব বিক্রি করে তিন লক্ষ টাকা খরচ করেছেন।

ডাক্তাররের পরামর্শ অনুযায়ী আরও তিন মাস হাসপাতালে থাকতে হবে এবং ব্যয় হবে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। তবেই তার শিশু সন্তান স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে। শিশুটির মুখে হাঁসি ফোটাতে তিনি সমাজের হৃদয়বান বৃত্তবানদেও সহযোগিতা কামনা করছেন।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS