অভিনেতা শুভ ব্যস্ত হচ্ছেন কলকাতায়

অনলাইন ডেস্ক: এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টালিউডে নিয়মিত কাজ করছেন জয়া আহসান। সেই পথেই হাঁটতে চান অভিনেতা আরিফিন শুভ। নিয়মিত কাজ করার জন্য সেখানে থাকার ঠিকানাও খুঁজছেন।
এমনটা নিজেই জানালেন অভিনেতা। পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শুভ জানান, টালিউডের নির্মাতারা তাঁকে নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
তাই সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগটা নিতে চান তিনি।গত বছর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে অনেকটা আড়ালে আরিফিন শুভ।
ছাত্র আন্দোলনে নীরব থাকায় তাঁকে নিয়ে যখন সমালোচনা হচ্ছিল, সে সময় হঠাৎ করে জানান দেন বিবাহবিচ্ছেদের কথা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁর সরকারি প্লট বাতিল নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। তখনও শুভ ছিলেন নিশ্চুপ।
দেশে শুভর নতুন কোনো কাজের খবর পাওয়া না গেলেও সে সময়ে কলকাতায় সৌমিক সেনের ‘জ্যাজ সিটি’ নামের একটি সিরিজের শুটিং করেন তিনি। এই সিরিজে কাজ করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নিয়মিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিনেতা।
শুভ এখন আছেন কলকাতায়। সেখানে একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সৌমিক সেনের জ্যাজ সিটিতে কাজের জন্য অনেক দিন ধরে কলকাতায় আসা–যাওয়া হচ্ছে।
মনে হলো এখানকার লোকজন আমাকে নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তাই আমিও নিজেকে এক্সপ্লোর করতে চাই এখানে।’
টালিউডে নিয়মিত কাজ করতে হলে সেখানে থাকতে হবে। এই বিষয়টা খুব ভালো করেই জানেন শুভ। এ প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেছেন, ‘সেই চেষ্টাই করছি। জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী যেভাবে দুই দেশে কাজ করছেন, আমিও সেটাই চাই।’
শোনা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে থাকার ঠিকানা খুঁজছেন শুভ। তবে এই প্রসঙ্গে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি তিনি। একটু ঘুরিয়ে বললেন, ‘পরিকল্পনা করে আমার ক্যারিয়ারে কোনো কিছু হয়নি। মডেলিং দিয়ে শুরু।
তারপর টেলিভিশন, রেডিও ও সিনেমা সব করেছি। সেগুলো করতে গিয়ে বুঝেছি, পরিকল্পনা করে কিছু হবে না, অন্তত আমার ক্ষেত্রে।’
‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন আরিফিন শুভ।
কিন্তু গণ–অভ্যুত্থানের কারণে সময়ের বিবর্তনে সেই সিনেমাই তাঁর জন্য যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এমনটা মানতে নারাজ শুভ। বলেন, ‘পৃথিবীতে যত জায়গায় এ পর্যন্ত কোনো অভ্যুত্থান হয়েছে, তার সঙ্গে কিছু কোল্যাটেরাল ড্যামেজ হয়েছে।
আপনি পার্কের মধ্য দিয়ে শান্তিতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আচমকা একটা ঘটনার শিকার হয়ে গিয়েছেন। এতে কিছু করার থাকে না। আমি সচেতনভাবে অরাজনৈতিক মানুষ। অভিনয় ছাড়া কিছু করি না। কোনো ব্যবসা নেই, ব্যাকআপ নেই।
যদি সত্যি সত্যি সমস্যায় পড়তাম, তাহলে কলকাতার এই ক্যাফেতে বসে সাক্ষাৎকার দিতে পারতাম না।’
নিজের কাজ নিয়ে শুভ বলেন, ‘সামনে আমার “নীলচক্র” সিনেমাটি মুক্তি পাবে। এরপর “নূর”, “ঠিকানা বাংলাদেশ”, “লহু” রয়েছে।
আমি সারা জীবন দুটো বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছি, যে চরিত্রটা আমাকে দেওয়া হয়েছে, সেটা হয়ে ওঠা, আর আমার কাজ দেখে দর্শকের প্রতিক্রিয়া।
আমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বোকা লোকের চরিত্র দিন, আমি সেখানে নিজেকে উজাড় করে দেব। কিন্তু বাস্তবেও আমি সেই বোকা লোকটা, এমন তো নয়। আশা করি, আমি সবটা বোঝাতে পেরেছি।’
ক্যারিয়ার, রাজনীতির পাশাপাশি শুভ কথা বলেছেন নিজের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়েও। শুভ বলেন, ‘সম্পর্ক ভাঙার ঘটনা পৃথিবীতে প্রথম ঘটছে না। এর চেয়ে অনেক খারাপ কিছু প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ঘটছে।
অভিনয় জগতে থাকার জন্য আমাদের নিয়ে মুখরোচক খবর হয়, কী আর করা যাবে। তবে বাইরের আলোচনা আমার ওপর প্রভাব ফেলে না। মানুষ এখন বড্ড জাজমেন্টাল। বাকিরা কী বলছে, তার ওপর আমার জীবন নির্ভর করে না।’