াকা | এপ্রিল ২৪, ২০২৫ - ২:০১ পূর্বাহ্ন

সুন্দরবনের সার্বিক নিরাপত্তায় অবদান রেখে চলেছে কোস্টগার্ড

  • আপডেট: Wednesday, April 23, 2025 - 7:30 pm

অনলাইন ডেস্ক : দেশের উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, বনজ সম্পদ সংরক্ষণ, মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।

বিশেষ করে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলদস্যু ও বনদস্যু নির্মূল, জেলেদের নিরাপত্তা প্রদান এবং নৌপথে অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কোস্টগার্ড জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন মোংলা মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বিএন) সিয়াম-উল-হক  সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।

সিয়াম-উল-হক বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমায় ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বর্ডার (আই এম বি এল)  অতিক্রমকারী ৯৫ জন ভারতীয় জেলেকে ৬টি বোটসহ হস্তান্তর এবং ৯০ জন বাংলাদেশি জেলেকে ২টি বোটসহ দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সন্ত্রাস দমনে অপারেশন পরিচালনা করে ৯০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৯০ রাউন্ড গুলি, ১০ টির অধিক বোমা ও ককটেলসহ ৮৫ জন সন্ত্রাসী ও ডাকাত আটক করা হয়। মাদক নিয়ন্ত্রণে ৫ হাজার পিসের অধিক ইয়াবা, ২৪ কেজি গাঁজা, ২০০টির বেশি বিদেশি মদ, হুইস্কি ও বিয়ার জব্দ করা হয়।

পাশাপাশি চোরা চালান রোধে  ৮১ হাজার ভারতীয় বিড়ি, ৬৩৫ পিস সুন্দরবনের কাঠ, ৬০০ কেজি হরিণের মাংস, ৮টি হরিণের চামড়া ও ২০০টির বেশি ফাঁদসহ ২০ জন হরিণ শিকারিকে আটক করা হয় বলেও জানান তিনি।

সিয়াম-উল-হক বলেন, ১ হাজার কোটি টাকার সমমূল্যের অবৈধ জাল, ৩০০ কোটি টাকার রেণুপোনা, ২ হাজার ৫০০ কেজি বিষাক্ত চিংড়ি এবং ১০ হাজার  কেজি জাটকা, ১২০ টন চোরাইকৃত লোহার স্ক্র্যাপ, ৭ হাজার লিটার ডিজেল ও হাইড্রোলিক অয়েল, ১ হাজার ২ শত  লিটার অবৈধ পেইন্ট, সুন্দরবনে অপহৃত ৩৫ জন জেলে ও সমুদ্রে দুর্ঘটনায় পতিত বোট থেকে ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে ২ হাজারের বেশি দুস্থ, অসহায় ও শিশুদের চিকিৎসা-সেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরবনে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান ও দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে গত রমজানে মোংলা, রূপসা, নোয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান গুদামে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নিয়ম বহির্ভূত মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সিয়াম-উল-হক বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নৌবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, বন বিভাগ, মৎস্য অধিদপ্তর ও শিপিংসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন উপকূলীয় অঞ্চলে শুধু নিরাপত্তাই নয়, বরং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের জানমাল রক্ষা, বন্দর নিরাপত্তা, বনজ সম্পদ সংরক্ষণ ও মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমেও মানুষের আস্থা অর্জন করেছে এবং ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সূত্র: বাসস