ঢাকা | এপ্রিল ২২, ২০২৫ - ৬:৩২ পূর্বাহ্ন

নন্দনগাছী স্টেশনে ট্রেন না থামায় চরম দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী

  • আপডেট: Monday, April 21, 2025 - 11:42 pm

চুরি হয়ে যাচ্ছে স্টেশনের সম্পদ

মোজাম্মেল হক, চারঘাট থেকে: রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনে ট্রেন না থামায় চরম দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী। যাত্রীদের জন্য বিন্দুমাত্র সুযোগ-সুবিধা নেই সেখানে। রেলওয়ে স্টেশনটি দীর্ঘদিন বন্ধ অবস্থায় আছে। স্টেশনটিতে ট্রেন থামলেও লোকবলের অভাবে টিকিট বিক্রিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

এতে একদিকে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। অন্যদিকে লোকবল না থাকায় স্টেশনের সম্পদ চুরি হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, ১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত।

৯০ বছর আগে স্থাপিত স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী, এই স্টেশনে টিকিট মাস্টার, স্টেশন মাস্টার, পোর্টারম্যান, কয়েন্সম্যান, গেটম্যানসহ প্রায় ১২ জন জনবল ছিল। কিন্তু বর্তমানে কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্ম আছে, স্টেশন ঘর আছে কিন্তু কোন লোকালয় নেই। পড়ে আছে জরাজীর্ণ ভাবে নন্দনগাছী স্টেশন। আবাসিক ভবনের ময়লা-আবর্জনা ও আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে স্টেশনের আশপাশের এলাকা। স্টেশনে চা দোকানদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ১৫ বছরের বেশি হলো দেখছি এই স্টেশন বন্ধ হয়ে আছে।

এর মাঝখানে ১ জন কর্মকর্তা ছিলেন এখন তাও নেই। তিনি সরদহ রেল স্টেশনে চলে গেছে। শূন্য হয়ে আছে এই স্টেশনের ভবন গুলো। স্থানীয়রা জানান, রাত হলেই ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে স্টেশনে। অপরাধীরা এসে আশ্রয় নেয় সেখানে। উপজেলার মাদক বিক্রির স্পট এটি। এ ছাড়া অযত্ন-অবহেলায় স্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি নষ্টও হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরদহ স্টেশন মাস্টার ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে এই রুটে চলাচলকারী ২ টি ট্রেন এই স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। টিকিট মাস্টার না থাকায় যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন না। এই স্টেশন থেকে ট্রেন ভ্রমণ করতে গেলে টিকিট আনতে হয় ১০ কিলোমিটার দূরের সরদহ অথবা ১২ কিলোমিটার দূরের আড়ানী স্টেশন থেকে। স্থানীয় লোকজন নিজেরা গিয়ে, কখনো যানবাহনের চালকদের মাধ্যমে টিকিট কেটে রেখে এই স্টেশন থেকে ট্রেন ভ্রমণ করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, টিকিট না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। স্টেশনটি দ্রুত চালু করে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করার দাবি এলাকাবাসীর। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চারঘাট উপজেলার সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, আবাদযোগ্য ভূমি চাষাবাদের অভাবে যেমন পরিত্যক্ত হয়ে যায়, এ স্টেশনের অবস্থাও তাই হয়েছে। স্টেশনটি চালু হলে এই অঞ্চলের যাত্রীদের খুব উপকার হবে।

স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, এই স্টেশন পূর্ণাঙ্গভাবে চালু থাকলে এই অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই আন্তনগর ট্রেনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে সহজে যাতায়াত করতে পারতেন।

ঈশ্বরদী পাকশী রেলওয়ের কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণে নন্দনগাছী স্টেশন সহ আরও অনেকগুলো স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কবে এর সমাধান হবে তা জানা নেই বলে তিনি জানান।