ঢাকা | মার্চ ১০, ২০২৫ - ১:৫০ পূর্বাহ্ন

সারাদেশে চলমান ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ

  • আপডেট: Sunday, March 9, 2025 - 12:28 am

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ, ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করে নারীসহ জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগে সন্ধ্যা ৭ টার আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড় হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

পরে সাড়ে ৭টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ছাত্রী হলগুলোর সামনে পৌছালে নারী শিক্ষার্থীরা হল থেকে দলে দলে বের হয়ে এসে মিছিলে যোগদান করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষিতার কান্না, আর না আর না;, ‘ধর্ষকের শাস্তি, মৃত্যু মৃত্যু‘; ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না‘; ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জবাই কর‘; ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না‘; ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘এই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মা বোনদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বার বার বলতে চাই আপনারা যদি আমার বোনদের ও জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে এই দেশের শাসনভার চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন। আপনারা যদি শাসনভারে থাকতে চান তাহলে অতি শীঘ্রই আমার বোনদের ধর্ষকদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে বাংলাদেশ থেকে ধর্ষককে বিতাড়িত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।‘

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, আমরা প্রত্যেকদিন কোন না কোনভাবে যৌননিপীড়নের স্বীকার হই। আমরা যখন ক্যাম্পাসে ঘুরি রিকশাওয়ালারাও আমাদের উত্ত্যক্ত করে, আমাদের শরীর নিয়ে উল্টপাল্টা মন্তব্য করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার প্রশ্ন আমরা যদি ক্যাম্পাসেই নিরাপদ না থাকতে পারি তাহলে রাস্তায় কিভাবে নিরাপদ থাকবো।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের তনু থেকে শুরু করে আছিয়া পর্যন্ত কোনো ধর্ষণের বিচার আমরা পাইনি। আইন উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আপনি যদি ধর্ষকদের উপযুক্ত বিচার করতে না পারেন তাহলে ধর্ষককে জনগণের হাতে তুলে দেন। আমার মায়েরা আমার বোনেরা ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে। ধর্ষক শুধু দৈহিকভাবে একজন মেয়েকে শেষ করে না, মানসিকভাবেও ধ্বংস করে দেয়।

একটা ধর্ষিতা নারীর প্রত্যেকটা দিন কতো দুর্বিষহ একমাত্র সে ই বলতে পারবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো আপনারা যদি ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারেন তাহলে পদত্যাগ করুন। ক্ষমতা জনগনের হাতে ছেড়ে দিন জনগণ ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাম্মৎ নিসা বলেন, এদেশে নারীরা আজ অরক্ষিত। যেখানে আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষিত হয় এবং ধর্ষককে কোনো শাস্তি দেয়া হয় না। আমরা রাতে টিউশন করে আসতে ভয় হয়। রিকশাওয়ালারা আমাদেরকে উত্ত্যক্ত করে, বাসেও আমরা অনিরাপদ। আমরা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড চাই। আমাদের এই বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। এসময় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।