ঢাকা | মার্চ ৩, ২০২৫ - ৮:১৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম

ঝিনাইদহে সবজির দাম নাগালে, সয়াবিন তেলের সংকট

  • আপডেট: Sunday, March 2, 2025 - 6:59 pm

অনলাইন ডেস্ক : পবিত্র রমজানে অন্যান্য সবজির দাম নাগালে থাকলেও বেড়েছে শসা, বেগুন ও লেবুর দাম। বাজারে দেখা দিয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট।

সরেজমিনে জেলা সদরের বাজার ঘুরে দেখা যায়, অদৃশ্য কারণে ঝিনাইদহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে মিলছেনা এক লিটার বা দুই লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল। তবে খোলা তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, অধিক মুনাফার জন্যই ব্যবসায়ীরা বোতলজাত সয়াবিন ভেঙে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করছে।

এদিকে রমজান মাসকে সামনে রেখে খেজুর, শসা, বেগুন ও লেবুর বাড়তি দাম লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং না থাকায় সয়াবিন তেলের বোতলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে ইচ্ছেমত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।

জেলা শহরের নতুন হাটখোলা বাজারে গিয়ে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন আগেও আধা লিটার, এক লিটার ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে পাওয়া যেত। কিন্তু রোজা সামনে রেখে হঠাৎ করেই বাজার থেকে বোতলজাত তেল উধাও হয়ে গিয়েছে। ভোক্তাদের অভিযোগ, বোতলজাত সয়াবিন তেল ভেঙে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। খোলা সয়াবিন তেলের সঙ্গে কম দামের পামওয়েল মেশানো হচ্ছে। এতে প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তা।

জানা যায়, ছোলা, মসুর ডাল, চাল, ডিম, আটাসহ অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দাম বেড়েছে বেগুন, ধনিয়া পাতা, গাজর ও শসার। ভোক্তারা বলছেন, রোজা শুরুর কয়েকদিন আগেও পাতি লেবুর হালি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এখন সেই লেবু ৬০ থেকে ৭০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজি দুদিন আগেও ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

রমজান মাস উপলক্ষে হাটখোলা বাজারে বাজার করতে আসা আকরাম হোসেন বাসসকে বলেন, ‘বাজারে কোনো বোতলজাত সয়াবিন তেল নাই। সবই খোলা তেল। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকতে পারে। রোজার মাস এলেই ব্যবসায়ীরা মুনাফার জন্য কেমন অমানবিক হয়ে ওঠে।’

অপর এক ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতিবছর রমজান মাস এলেই ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার জন্য নানা রকম অপকৌশল করে। তবে এবার সেই চিত্র কিছুটা কমেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বাকি পণ্যগুলো নাগালেই আছে। সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। তবে ডাল, চাল, লবণ, আদা, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কিছুটা কমেছে।

মাসুদা খাতুন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, রমজান মাস এলে বেগুন, শসা, গাজর, ধনিয়া পাতার দাম বেড়ে যায়। তবে শাক-সবজির দাম কমেছে। পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আদার দাম অনেক কমে গেছে। কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে অনেক। সয়াবিন তেলের সংকট নিরসনসহ এর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি  সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে ভোজ্যতেলের সংকটের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। নতুন কোনো বোতলজাত তেল আসেনি। যে কারণে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বাসসকে বলেন, তেলে ভেজাল দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন ভোক্তারা সচেতন। পাইকারি পর্যায়ে তেলে ভেজাল মেশানোর অভিযোগ সত্য নয়।

ঝিনাইদহ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা বলেন, রমজান মাস পবিত্র মাস, আত্মশুদ্ধির মাস। আমরা ব্যবসায়ীদের কাছে লিফলেট বিতরণ করেছি। অধিক মুনাফার জন্য ব্যবসায়ীরা যেন পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে সে লক্ষ্যে আমরা ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছি। জেলার শহরগুলোতে রমজানের বার্তা নিয়ে আমরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে মাইকিং শুরু করেছি।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, বাজার মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রমজান মাসে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণ, পণ্যের মান নিশ্চয়ণসহ সার্বিক তদারকি জোরদার করা হবে। জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অভিযান জোরদার করা হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।

সূত্র: বাসস