ঢাকা | ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৫ - ৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

নিয়ামতপুরে ভিমরুলের কামড় খেয়ে দিশেহারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট: Tuesday, February 25, 2025 - 7:10 pm

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: ঘড়িতে তখন দুপুর দুইটা ছুঁই ছুঁই। হঠাৎ চিৎকার, দৌড়া-দৌড়ি ও কান্নার শব্দ। বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে দিক-বিদিক ছুটছে শিক্ষার্থীরা। অফিস কক্ষ থেকে এমন শব্দ কানে পৌঁছতেই বের হয়ে আসলেন শিক্ষকরা। বের হয়ে এসে কোন কিছু বুঝার আগেই তারাও পড়লেন বিপদে। ততক্ষণে ভিমরুলের দল ঘিরে ফেলেছেন শিক্ষকদেরও। কামড়েও দিয়েছেন কয়েকজনকে।

পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে এমন মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের অফিস ও শ্রেণিকক্ষে ঢ়ুকিেেয় নিরাপদ করার চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা। কিন্তু তাতে কি! শিক্ষক শিক্ষার্থীর পিছু পিছু ভিমরুলও ঢুকছে শ্রেণিকক্ষে আর হুল ফুটাচ্ছে শরীরে। ভিমরুলের কামড় খেয়ে বিষে কাতরাচ্ছেন শিক্ষকসহ ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী। এমন ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার টগরইল দামপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা যায়, টিফিনের সময় শিক্ষার্থীরা মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও যে যার মত মাঠে, বারান্দায়, গাছের নিচে খেলা করছিলো। এমন সময় আকস্মিক মাঠে দৌড়া- দৌড়ি করা শিক্ষার্থীদের আক্রমণ করে ভিমরুলের দল। ভিমরুলের কামড় খেয়ে শিক্ষার্থীরা দিক বিদিক পালাতে থাকে। শিক্ষার্থীদের পিছু পিছু ছুটে চলে ভিমরুলের দলও। এমন ঘটনায় অন্য শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পালাতে গেলে তাদেরও আক্রমণ করে ভিমরুল। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে ভিমরুলের এ আক্রমণ।

ভিমরুল আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বিদ্যালয় পাড়া। ৫/৬ টি করে ভিমরুলের কামড় খেয়ে সহকারী শিক্ষক রাজিউল ইসলাম, চতুর্থ শ্রেণির সাকিল, পঞ্চম শ্রেণির মিনহাজ, তৃতীয় শ্রেণির জুবায়েরসহ আরও ১৫/২০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসাও নিতে হয়। সংবাদ পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এসেই তারা কামড় খাওয়া শিক্ষার্থীদেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া শুরু করেন। কেই দেন চুনের প্রলেপ, কেউ লোহার রড ঘষে দেন। তবে এ ঘটনায় বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিনহাজ জানায়, টিফির বিরতীতে তারা মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। ক্রিকেটের একটি বল মাঠের পূর্ব প্রান্তে গেলে সেটি কুড়াতে যায়। ফিরার সময় তাকে আক্রমণ করেও ভিমরুলের দল। এমন সময় দৌঁড়ে পালিয়ে আসলে পিছু পিছ ভিমরুল তেড়ে আসে ও তাকে গিওে ফেলে। এমন ঘটনায় মাঠে অবস্থানরত সহপাঠিরা পালাতে গেলে তাদেরও আক্রমণ করে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাজিউল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তিনি টিফিন সেরে ব্রেসিনে হাত ধুচ্ছিলেন। এমন সময় শিক্ষার্থীদের চেঁচামেচিতে তিনি বাইরে যেতেই কয়েকজন শিক্ষার্থী দৌড়ে অফিস কক্ষে ঢুকে পড়ে। তাদের পিছু পিছু ঢুকে ভিমরুলও।

এমন দৃশ্যে তিনি হকচকিয়ে যান। কামড় খেয়ে ছটপট করছে ওই শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে অণ্যদের নিরাপদ করতে তিনি বাইরে এসে দিক বিদিক ছুটে চলা শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ঢুকতে সাহায্য করেন। ততক্ষণে তাকেও ঘিরে ফেলেছে ভিমরুলের দল। ৪/৫ টি ভিমরুলের কামড় খেয়ে তিনিও বিষ যন্ত্রনায় হয়ে পড়েন কাতর।

ঘটনা জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, এটি ছিল অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিদ্যালয় মাঠে ভিমরুল বাসা বাধতে পারে এমন কোন জঙ্গল নেই। যে কোন কারনেই হোক, ভিমরুলের দল ছুটাছুটি করা শিক্ষার্থীদের আক্রমণ করে। দু’এক জনকে বেশি কামড় দেয়ায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এনে ইনজেকশন দিতে হয়েছে। এছাড়া বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।