অযত্ন অবহেলায় পুঠিয়ার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার

দিবস আসলে পরিপাটি, বাকী সময় অরক্ষিত:
পুঠিয়া প্রতিনিধি: অযত্ন-অবহেলায় দাঁড়িয়ে আছে ভাষা শহিদদের স্মরণে নির্মিত পুঠিয়া উপজেলার পৌর এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। শহিদ মিনারটি দেখভালের কেউ নাই। শহিদ মিনারের সামনেই জ্বালানির জন্য খড় শুকাতে দিয়েছে স্থানীয়রা। এমন চিত্র দেখা গেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। এই শহিদ মিনার পুঠিয়া পাঁচআনী রাজবাড়ী বাজারে প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় অবস্থিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই শহিদ মিনারটি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার স্থান। কিন্তু এই শহিদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। সেজন্য হয়তো পৌরসভা দায়বদ্ধতার কারণে একটু রং তুলে দিয়ে চলে যাবে। একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ফুলের ডালা দিয়ে শ্রদ্ধাও শেষ, এই শহিদ মিনারের কাজও শেষ।
আবার যখন একুশে ফেব্রুয়ারি আসবে, তখন আবার রং তুলি থাকবে। আর মাঝে যে সময়গুলো থাকলো, এই সময়গুলোতে কখনো ছাগল, কখনো কুকুর- এছাড়াও মানুষও জুতা-সেন্ডল পায়ে দিয়ে উপরে উঠে ছবি তোলে। বছরের অন্যান্য সময়ে শহিদ মিনারটি অযত্ন আর অবহেলায় ও অরক্ষিত থাকে, শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর আসলেই পরিপাটি করা হয়।
একাধিক মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, যেহেতু এটি শহিদদের স্মৃতির প্রতীক, তাই এটিকে যথাযথ মর্যাদায় রাখা উচিত। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে শুধুমাত্র এই শহিদ মিনারটি পরিষ্কার করা হয় লোক দেখানো মাত্র। আমাদের মনে রাখতে হবে, যেহেতু শহিদ মিনার শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার স্থান; তাই শহিদ মিনারকে অপমান করা মানেই শহিদদেরকে অবমাননা করা।
উপজেলায় এত কিছু বরাদ্দ আসে, কিন্তু শহিদ মিনারের চারপাশে একটি বাউন্ডারি ওয়ালের জন্য কোন সময় বরাদ্দ হলো না। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় হর হামেশাই কুকুর থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও জুতা স্যান্ডেল পরিধান করে ঢুকতে পারে।
এ বিষয়ে পুঠিয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলে, বিশেষ দিবসগুলো উপলক্ষে উপজেলা আমাদেরকে দায়িত্ব দেয় সেই সময় আমার শহিদ মিনারের পরিষ্কার-পরিছন্নের কাজ করে থাকি।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ, কে, এম, নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, বিশেষ দিবসগুলোতে আমরা যথাযথ মর্যাদাই শহিদ মিনারকে প্রস্তুত করে থাকি। এছাড়াও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।