রাণীনগরে ১৪জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৮২নং ছাতারদিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র ১৪জন শিক্ষার্থী নিয়ে। এর মধ্যে ৪র্থ শ্রেনীতে একজন শিক্ষার্থী থাকলেও ৫ম শ্রেনী রয়েছে শিক্ষার্থী শুন্য। অথচ ওই বিদ্যালয়েই দেয়া হয়েছে অর্ধ কোটি টাকার একটি নতুন ভবন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি-ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারনে এমন করুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বিদ্যালয় সুত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে কালীগ্রাম ইউনিয়নের ছাতারদিঘী গ্রামে অবস্থিত ৮২নং ছাতারদিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এলাকায় শিক্ষা বিস্তার ও জনমানুষকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে এলাকার সচেতন ও গুণীজনদের সহযোগিতায় ১৯৮৮ইং সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। একসময় ভরপুর শিক্ষার্থী ছিল বিদ্যালয়ে। কিন্তু ধীরে ধীরে পড়া-লেখার মান, বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় বিদ্যালয় থেকে ঝরতে থাকে শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গত দুই বছর বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। বিদ্যালয় খোলা হলেও পরিচালনা কমিটি এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মধ্যে চলে দ্বন্দ্বের টানা পোড়ন। আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই ভেঙ্গে পড়ে শিক্ষার মান। ফলে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে পার্শ্ববর্তি বিদ্যালয়ে পার হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দেয়া তথ্য মতে, করোনা ভাইরাসে বিদ্যালয় বন্ধ হবার আগে প্রায় ২৫জন শিক্ষার্থী ছিল। বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে ১ম শ্রেনীতে ৫ জন, ২য় শ্রেনীতে ৪জন, ৩য় শ্রেনীতে ৪জন ও ৪র্থ শ্রেনীতে ১জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে ৫ম শ্রেনীর মাত্র ৩জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩জনই অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে কোন শিক্ষার্থীই নেই। বিদ্যালয়ে মাত্র ১৪জন শিক্ষার্থীদের পড়াতে রয়েছেন তিন জন শিক্ষক। তিনি আরো জানান, ইতি মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ৬০ লক্ষ ৬২ হাজার ১৩৯ টাকা প্রাক্কলিত ব্যায়ে নতুন একটি ভবন নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। হয়তো অল্প সময়ের মধ্যেই ভবনটি হস্তান্তর করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি অল্প দিন হলো এই উপজেলায় যোগদান করেছি। এসেই বিষয়গুলো শুনেছি। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফেরাতে প্রয়োজনে মা, অভিভাবক সমাবেশ করে বা আরো অন্যান্য কোন প্রক্রিয়া থাকলে সেগুলো অনুসরণ করা হবে। তবে কেন শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে সে বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।