আ.লীগ নেতা বাবুল হত্যায় দলের ৩ নেতার মদদ রয়েছে, অভিযোগ শাহরিয়ারের
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পাওয়া রাজশাহীর বাঘা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল (৫৫) মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাবুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বাঘা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাঁওপাড়া মহল্লায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আমিরুল ইসলাম আমুর কবরের পাশে দাফন করা হয়।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইউসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। বাবুল বাঘা পৌর এলাকার গাওপাড়া গ্রামের মৃত আমুর হোসেন আমুর ছেলে।
গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বাবুল। বাবুল নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। এ ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করে পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছেন জেলার শীর্ষ নেতারা।
বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান, বর্তমান মেয়র, রাজশাহী-৩ আসনের এমপিসহ দলের কয়েক নেতাদের দোষারপ করেছেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম। মরদেহ সামনে রেখে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ দোষারোপ করেন।
বাবুল নিহতের ঘটনায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ-সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবং বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলুকে দোষারোপ করেছেন। তার হত্যায় এ তিন নেতার মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই একজনের লাশের দরকার ছিল।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাবুল নিহতের ঘটনায় জড়িত খুনি আক্কাস (আক্কাস আলী, বাঘা পৌর মেয়র) ও খুনি মেরাজ (মেরাজ উদ্দিন, বাকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান)। তাদের পেছনে মদদদাতা আছে। দুই বছর আগে আক্কাস বহিষ্কৃত হয়েছিল আওয়ামী লীগ থেকে। খায়রুজ্জামান লিটন নিজের মুখে সেই কথা এখানে বলেছিলেন। এর সাতদিনের মাথায় খায়রুজ্জামান লিটনের গাড়িতে আক্কাস ও মেরাজকে ঘুরতে দেখা গেছে।’
শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা জবাব চাই, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে। অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলুর কাছে জবাব চাই, সে (লাভলু) কেন আজ পলাতক? খুনের মামলায় দুজন সশরীরে উপস্থিত ছিল। পেছন থেকে মদদদাতা হিসাবে আসাদুজ্জামান আসাদ, এএইচএম খায়রুজ্জামান ও লায়েব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হবে। তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। আমাদেরও দায়িত্ব আছে।’
শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘আমি প্রশাসনকে বলব, এই যে কয়েকজনের নাম বললাম, আসামিদের টেলিফোন নম্বরের সঙ্গে, তাদের সাতদিনের টেলিফোন মিলিয়ে নেবেন। তাদের সঙ্গে যদি দিনে পাঁচবার করে কথা না হয়, আমি সংসদ-সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে যাব।’