প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
স্টাফ রিপোর্টার: সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদে কটুক্তি ও মানহানির দাবি তুলে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পবা উপজেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পপি খাতুন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই প্রতিবাদ জানান। বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।
বিবৃতিতে পপি খাতুন উল্লেখ করেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রকেটের গতিতে বয়স বাড়িয়ে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পপি’ ও আরেকটি পত্রিকায় ‘ভাইস-চেয়ারম্যান হতে জন্ম নিলেন ৩ বার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদসহ সামাজিক মাধ্যমে আমাকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত একটি সংবাদ ভিডিও আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যেহেতু আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি, সেহেতু সংবাদগুলোতে জনগণের সামনে আমাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত কটুক্তিমূলক, অপমানজনক, মানহানিকর ও সুস্পষ্টভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমার কাছে পরিলক্ষিত হয়েছে।
বিবৃতিতে পপি বলেন, প্রকাশিত সংবাদগুলো দুইটি আলাদা প্রতিষ্ঠানের পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও দুই পত্রিকার সংবাদের তথ্য উপস্থাপনের ধরণ, বিভিন্ন অংশের বাক্য এবং শব্দ চয়ন পুরোপুরি সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় এটি অত্যন্ত পরিষ্কার, গণমাধ্যমের একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার নির্বাচনে পরাজিত প্রতিপক্ষের কিছু অংশের সঙ্গে ‘স্বার্থভিত্তিক’ আঁতাত করে সংবাদগুলো প্রকাশ করেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ঘৃণিত।
বিবৃতিতে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান দাবি করেন, প্রকাশিত সংবাদে আমি বয়স জালিয়াতি করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি বলে যে দাবি করা হয়েছে- তা কোনভাবেই সঠিক নয়। কারণ ‘জালিয়াতি’ শব্দটি যে অর্থে ব্যবহৃত হয়, আমি আমার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো প্রক্রিয়ায় এমন কোনো কর্মকাণ্ড করিনি, যা উক্ত অর্থের দিকে নির্দেশ করে। সংবাদে বয়স বাড়ানোর পেছনের কারণ হিসেবে যে উদ্দেশ্যটিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তাও সঠিক নয়। কারণ রাষ্ট্রের যে কোন নাগরিক, যদি তাঁর জন্ম তারিখ ভুল থাকে, তবে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সে অবশ্যই তা সংশোধন করতে পারে। আমিও এই রাষ্ট্রেরই একজন নাগরিক। আমার অতিতের জন্মতারিখ ভুল থাকায় আমি প্রচলিত আইন অনুযায়ী যেসকল কাগজপত্র প্রদানের মাধ্যমে তারিখ সংশোধন করা যায়, সেসকল কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রদান করেই বয়স সংশোধন করেছি। আমি যেসকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি, ওই সকল কাগজপত্র প্রচলিত আইন অনুযায়ী সঠিক বলেই আমার বয়স সংশোধন করা হয়েছে। এর মধ্যে ভুয়া কাগজপত্র প্রদান ও এই কাজ সম্পন্ন করতে যে রাজনৈতিক চাপের কথা উক্ত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে; তা মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অতএব আমি দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আইন মেনে জন্মতারিখ ভুল থেকে সঠিক করিয়ে কি অপরাধ করেছি এবং কোন অর্থে এখানে ‘বয়স জালিয়াতি’র কথাটি দাবি করা হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়।
বিবৃতিতে সংবাদের আরেকটি বিষয়ে আলোকপাত করে পপি বলেন, পুরো সংবাদকে একটি চটকদার খবরে পরিণত করতে আমার অতিতের ব্যক্তিগত কিছু বিষয়কে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি মনে করি, সংবাদে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণ করতে যে পরিমাণ কার্যকর তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন, তার বেশ ঘাটতি থাকায় আমার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক তথ্যগুলোকে পুঁজি করা হয়েছে। কারণ নির্দিষ্ট একটি শিরোনামের খবরে কখনোই তাঁরা আমার অনুমতির বাইরে আমার ব্যক্তিগত ও অপ্রাসঙ্গিক কোনো তথ্য এবং ছবি ব্যবহার করতে পারেন না। এটি আইনগত অপরাধও বটে।
পপি দাবি করেন, প্রকাশিত সংবাদে আমার বিষয়ে পবা উপজেলার সাধারণ জনগণ দাবি করে যাদের একতরফা বক্তব্য ‘নিরপেক্ষ’ দাবি করে চালিয়ে দেয়া হয়েছে; তাদের আমিসহ উপজেলার অনেকেই চেনেন। তারা গত নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী সমর্থক। আমি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। সুতরাং তাঁরা যেকোনো বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে মতামত দেবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের বক্তব্য পুরো উপজেলাবাসীর নামে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা কখনোই আমার পুরো উপজেলা ও জনগণের বক্তব্য নয়। কারণ তাঁরা সঠিক এবং সত্য জানেন। তাঁরা আমাকে বিশ্বাস করেন, ভালোবাসেন বলেই তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।
বিবৃতির শেষ প্রান্তে উপজেলাবাসীকে উদ্দেশ্য করে পপি বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের অসৎ স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে নানা ষড়যন্ত্রে অবতীর্ণ হয়েছে। তাদের কথায় কান দেবেন না। সঠিকটা জানবেন এবং সত্যের সঙ্গে থাকবেন। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাকে আপনাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। সকল মিথ্যা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আপনাদের নিয়েই আমি সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।