ঢাকা | নভেম্বর ২৪, ২০২৪ - ৭:১৯ পূর্বাহ্ন

বাড়ি নির্মাণে বিনাসুদে ঋণসহ আট দাবি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের

  • আপডেট: Thursday, March 31, 2022 - 7:57 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন নিজেদের বাসস্থান ‘বীরনিবাস’ নির্মাণ করতে পারেন, এজন্য বিনাসুদে ২৫ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, প্রতি মাসে সরকার থেকে যে সম্মানী তাদের দেওয়া হয় সেখান থেকে মাসিক ন্যূনতম কিস্তিতে এই ঋণের টাকা পরিশোধ করার শর্ত দেওয়া হোক।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে ‘প্রধানমন্ত্রী সমীপে হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

দাবিগুলো উত্থাপন করে বক্তারা বলেন, মৌলিক-মানবিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিনীত আবেদন জানাচ্ছি। দাবিগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন করা না হলে যেকোনো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিগুলো হলো-

১. মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় সংবিধানের যথাযথ স্থানে ‘জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযাদ্ধা’, ‘৩০ লাখ শহীদ’ ও ‘২ লক্ষ সম্ভ্রমহারা মা-বোন’ শব্দগুলো লিপিবদ্ধ করা।

২. বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ১৯৭২ সালে প্রণীত মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে উচ্চতর বিচার বিভাগ, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বা সুপরিচিত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কমিশন গঠন এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সৃজনকারীদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমতুল্য অপরাধে বিচার করা।

৩. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতি সংরক্ষণ, গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাকে সমুন্নত রাখার কার্যক্রম চালাবে। তবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সৃষ্টির কারিগরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলায় লুটিয়ে দিয়ে আসছে বিধায় জামুকাকে বিলুপ্ত করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক বিষয়াদি দেখভাল করার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি আলাদা উইং সৃষ্টি করা।

৪. সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা যৌক্তিক পর্যায়ে পুনর্বহাল করা। কোটা না থাকার ফলে ক্ষতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেকার সন্তানদের বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারী, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার চাকরিতে সরাসরি নিয়োগ করা।

৫. মুক্তিযোদ্ধা মাসিক সম্মানী থেকে মাসিক ন্যূনতম কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে সরকারি নকসা অনুসরণ সাপেক্ষে আগ্রহী বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিজ দায়িত্বে “বীরনিবাস” নির্মাণের জন্যে বিনাসুদে ২৫ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ মঞ্জুর করা।

৬. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স, শারীরিক অসুস্থতা ও আর্থিক অস্বচ্ছলতা বিবেচনা পূর্বক মাসিক সম্মানী ভাতার সাথে ১০ হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং গুরুতর অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সিএমএইচ, সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

৭. জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মতো শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকেও বিজয় দিবস ও বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদান করা।

৮. দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পরাজিত রাজাকার অপশক্তি ও মহলবিশেষের পরাজয়ের প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার কোপানলে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গ হত্যা ও নানান অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বীর মুক্তিযেদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্যে সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাশেম আলী, মোজাম্মেল হোসেন হেলাল, আফতাব আহমদ শিকদার, জুলকারনাইন ডালিম, সারোয়ার জাহান, আবদুল খালেক বিশ্বাস, দীপকচন্দ্র গুপ্ত, আজহারুল ইসলাম, বাহারউল্লাহ মজুমদার প্রমুখ।