নগর আ’লীগের সভাপতি বললেন ‘নৌকার পক্ষে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়’!
স্টাফ রিপোর্টার: নৌকা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক। গত বুধবার সিলেটে প্রথম নির্বাচনি জনসভা থেকে আ’লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীসহ সবাইকে নৌকার পক্ষে সমর্থনের আহ্বান জানালেও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির মুখে প্রকাশ্যেই শোনা গেল ভিন্ন সুর! দলের সরাসরি পদধারী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল পুরোপুরি অবস্থান নিয়েছেন নৌকার বিপক্ষে।
শুধু তাই নয়, দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের নৌকার বিপক্ষে টানতে নৌকার পক্ষে কাজ করা ‘ম্যানডেটরি’ (বাধ্যতামূলক) নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি পদে আসা ওই নেতার এমন বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই নৌকার প্রতি আস্থাশীল নেতাকর্মী ও জনগণের মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। মহানগর আ’লীগের অন্য নেতারা বলছেন, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দলীয় প্রতীক সম্পর্কে তিনি এমন মন্তব্য করতে পারেন না।
জানা গেছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাকে। এর আগে এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। পরে গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ফজলে হোসেন বাদশাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা হলে কামালের দলীয় মনোনয়ন বাতিল হয়।
এর আগের নির্বাচনেও এখানে জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন বর্তমান এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। তৎকালীন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদশাকে সমর্থন করে সমন্বয় করলেও বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল শুরু থেকেই ফজলে হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
এ বিষয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার মতের অমিল থাকলেও অদৃশ্য কারণে এসবকে তোয়াক্কা করছেন না কামাল। এই আসনে নৌকার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে কাজ করছেন তিনি। শুধুমাত্র জোটের প্রার্থীকে পরাজিত করতে নিজ দলের প্রতীক ‘নৌকার পক্ষে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয় এমন কথাও বলছেন সদ্য দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসা মোহাম্মদ আলী কামাল।
কামালের এমন মন্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজাদ বলেন, যিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। দলের সভাপতি, সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। তিনি তো নিজেই নৌকার প্রার্থী ছিলেন। তিনি যদি থেকে যেতেন তবে কি হতো? তখন কি তিনি একথা বলতে পারতেন? এখানে স্বতন্ত্রকে সুযোগ দেয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র স্বতন্ত্রের মতো ভোট করবে। আমার দল বা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছেন, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, তারা নৌকার পক্ষেই কাজ করবো। এটিই স্বাভাবিক।