ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৬:৩৭ পূর্বাহ্ন

ইসরায়েল কথা শুনছে না, বিপাকে যুক্তরাষ্ট্র

  • আপডেট: Friday, December 8, 2023 - 9:00 pm

অনলাইন ডেস্ক: গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা বন্ধে ইসরায়েলকে থামাতে না পেরে এবার প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা হবে– ইসরায়েল এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও আমরা গাজায় যে চিত্র দেখছি, তাতে তাদের কথা ও কাজের মধ্যে মিল নেই। খবর আলজাজিরার।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতি-সংক্রান্ত বৈঠক ছিল গতকাল শুক্রবার। এর আগে ইসরায়েলের সমালোচনা করল প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার কথা উল্লেখ করে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসরায়েলের। এটি অপরিহার্য।

গত ৭ অক্টোবর থেকে চালানো হামলায় গাজায় প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা গাজার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানালেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করার সম্ভাবনা নেই। তবে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলের আচরণের চরম সমালোচনা করার লক্ষ্য রয়েছে মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবির প্রস্তাবটি তুলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে প্রস্তাবটি পাসের সম্ভাবনা কম।

ইসরায়েলের প্রধান সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠাচ্ছে। একই সঙ্গে বারবার যুদ্ধবিরতির বিরোধিতাও করেছে। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে উত্থাপিত আগের প্রস্তাবগুলোতেও ভেটো দিয়েছে। এবারের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ভেটো না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

হোয়াইট হাউস বলছে, গতকাল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ফোনে কথা বলেন। এ সময় অস্টিন আবারও তাঁর ‘সন্ত্রাসবাদ থেকে আত্মরক্ষার জন্য ইসরায়েলের অধিকারের জন্য স্থায়ী সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন।

ইসরায়েল বলেছে, গাজায় তাদের লক্ষ্যবস্তু হামাস। তারা বেসামরিক লোকদের ক্ষয়ক্ষতির থেকে সরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তবে জাতিসংঘের কর্মকর্তা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো বারবার বলে আসছে, অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য একটুও নিরাপদ জায়গা নেই। ইসরায়েলের চলমান হামলাকে তারা গণহত্যা বলেও অভিহিত করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার পার্থের মারডক ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও নিরাপত্তা স্টাডিজের লেকচারার ইয়ান উইলসন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো যে কোনো প্রস্তাবে ভেটো দেবেই, তা যত সাবধানেই উপস্থাপন করা হোক না কেন।

সুশীল সমাজের গ্রুপ ইউনাইটেড ভয়েসেস ফর আমেরিকার সভাপতি আহমেদ বেদিয়ার বলেন, ইসরায়েলের কট্টরপন্থি প্রধানমন্ত্রীকে সাহসী করে তুলে যুক্তরাষ্ট্র এখন নিজেকেই ‘কঠিন পরিস্থিতিতে’ ফেলেছে। সামরিক সহযোগিতা দিয়ে ইসরায়েলকে দানবে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু এখন সেই দানবের লাগাম টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু তা পারছে না যুক্তরাষ্ট্র।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইহুদিবাদী সেনারা। এতে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা।

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুমকি দিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে দ্বিতীয় পক্ষ হয়ে কাজ করলে লেবাননের রাজধানী বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলের পরিণতি হবে গাজার মতো। প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তর পরিদর্শনকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

সোনালী/জেআর