জেলহত্যা দিবস জাতিকে এগিয়ে চলার শক্তি যোগায়
সম্পাদকীয়
——————————
ক্ষমতার মোহ অনেক সময় উপেক্ষা করতে হয়। যদিও সবার পক্ষে তা সম্ভব হয় না। যারা পারেন তারা বীরের মর্যাদা পান। এমন ঘটনা এদেশে অজানা নয়। মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব উপেক্ষা করে তারা জেলে গিয়েছিলেন। সমঝোতা না করে বীরের মতো মৃত্যুকে আলিক্সগন করেছেন। তারা জাতীয় চার নেতা। এমন আত্মদান কেউ ভুলতে পারে না। মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে পথ দেখায় জাতিকে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনা তাই জাতিকে যত না শোকাভিভূত করে তার চেয়ে বেশি প্রেরণা দেয়। এগিয়ে চলার শক্তি যোগায়। বঙ্গবন্ধুর মতই জাতীয় চার নেতার মৃত্যুও হিমালয় পাহাড়ের মত ভারি। এগিয়ে চলার অদম্য প্রেরণা। আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে জেল হত্যা দিবস ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই এলো আরেকটি কলক্সকময়, রক্তঝরা, বেদনাবিধূর দিন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে হাত না মেলানোয় কারাগারের নিরাপত্তা হেফাজতেই নৃশংসভাবে খুন করা হয় তার ঘনিষ্ঠতম চার সহচরকে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে হত্যা করে খুনিরা চেয়েছিল জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির অগ্রগতি থামিয়ে দিতে। কিন্তু বেঈমানদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ঠিকই জাতি উঠে দাঁড়িয়েছে। এগিয়ে চলেছে দৃঢ় পদক্ষেপে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ক্ষমতাদখলকারী বিপথগামী সেনাসদস্যদের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠা বিরোধ সামলাতে পারেনি খুনি মোশতাক চক্র। ক্যু-পাল্টা ক্যুর রক্তাক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকে জেল হত্যার মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল পরাজিত অপশক্তির এই দোসররা। তাই জেলহত্যা দিবসে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার শপথ নেয় জাতি। বক্সগবন্ধু ও জেলা হত্যার শোক কীভাবে এগিয়ে চলার শক্তিতে পরিণত হয়েছে সেটা আজকের বাংলাদেশই প্রমাণ করে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকে দৈহিকভাবে নিশ্চিহ্ন করা গেলেও সেই চেতনা আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে। তাই তো সব বাধা মোকাবিলা করে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে জাতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত জাতির এই অগ্রগতি কোনভাবেই রোধ করা যায়নি, যাবে না। এটাই আজকের ঘোষণা।
সোনালী/জেআর