পাকিস্তানকে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বাসরুদ্ধকর জয়
অনলাইন ডেস্ক: এবারের বিশ্বকাপ আসরে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তান প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর হেরেছে টানা তিনটি। টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে খেলার আশা জিইয়ে রাখতে আজ মুখোমুখি হয়েছে আসরজুড়ে উড়তে থাকা প্রোটিয়াদের বিপক্ষে।
চেন্নাইয়ে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৬.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭০ রানের সংগ্রহ পায় বাবর আজমের দল। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মার্করামের ৯১ রানের ইনিংসে ১৬ বল হাতে রেখেই ১ উইকেটে জয় পায় আফ্রিকা।
দুই পরিবর্তন নিয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান
পাকিস্তানের দেওয়া ২৭১ রানের লক্ষ্যে প্রোটিয়াদের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। এ দুই ওপেনারের ভালো শুরু পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন কুইন্টন ডি কক। সে সুবাধে প্রথম দুই ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ৩০ রান। তবে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন এ ওপেনার। দলীয় ৩৪ রানে শাহিন আফ্রিদির বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
আউট হবার আগে ১৪ বলে খেলেন ২৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ডি ককের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে আসেন রাসি ফন ডার ডুসেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বাভুমা। তবে দলীয় ৬৭ রানে বাভুমা ২৮ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে ভাঙে ৩৩ রানের জুটি।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নামেন এইডেন মার্করাম। এ জুটিতে থিতু হয়ে রানের চাকা সচল রেখে পাকিস্তান বলার ওপর চড়া হতে থাকেন। কিন্তু দলীয় ১২১ রানে সেখানে বাধা দেন উসামা মির। এই লেগস্পিনারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ২১ রানে সাজঘরে ফেরেন ডুসেন।
চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে নামা হেনরিখ ক্লাসেন অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। দলীয় ১৩৬ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ১২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। চার উইকেট হারালেও রান রেট ঠিক রেখে মার্করামের ব্যাটে জয়ের ভিত পেয়ে যায় আফ্রিকা। তবে দলীয় ২৫০ রানে শতকের কাছ থেকে সাজঘরে ফেরেন তিনি। প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ৯৩ বলে ৯১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ১৬ বলে হাতে রেখেই ১ উইকেটের জয় পায় বাভুমার দল। পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুটা ভালো করতে পারেননি দুই পাকিস্তানি ওপেনার। দলীয় ২০ রানেই বিদায় নেন আবদুল্লাহ শফিক। মার্কো ইয়ানসেনের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। আরেক ওপেনার ইমাম উল হকও আজ করেছেন হতাশ। সপ্তম ওভারে দলীয় রান যখন ৩৮ তখন ইয়ানসেনেরই দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ১৮ বলে ১২ রান করে আজ সাজঘরে ফিরেন তিনি। ফলে দ্রুতই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান।
এদিকে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া পাকিস্তানের হাল ধরার জন্য তখন ক্রিজে অধিনায়ক বাবরের সঙ্গী হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুজন মিলে অবশ্য সেই পথেই এগোচ্ছিলেন। তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ে দুজনে স্কোরবোর্ডে তুলেন ৪৮ রান। তবে এরপরই হতাশ করেন রিজওয়ান। দলীয় ৮৬ রানে তিনি পরিণত হন জেরাল্ড কোয়েতজির শিকারে।
রিজওয়ান ফেরার পর ক্রজে বাবরের সঙ্গী হন ইফতিখার আহমেদ। এ জুটিতেও পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহে যোগ হয় ২১ রান। তবে ইফতেখারও আজ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, সাজঘরে ফিরেন ২১ রান করেই। ইফতেখার ফেরার পর অধিনায়ক বাবরও বেশিখণ টিকতে পারেননি, আউট হয়েছেন দলীয় ১৪১ রানে শামসির বলে উইকেট রক্ষক কুইন্টন ডি ককের ক্যাচে পরিণত হয়ে। তবে সাজঘরে ফেরার আগে তুলে নিয়েছেন টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় ফিফটি।
এরপর পাকিস্তানকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন সোউদ শাকিল এবং শাদাব খান। এ দুজন প্রোটিয়া বোলারদের দেখেশুনে খেলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে তুলেন ৮৪ রান। তবে এ জুটি ভাঙে শাদাব ৩৬ বলে ৪৩ রান করে কোয়েতজির বলে কেশব মহারাজের ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফিরলে।
এরপর দলীয় ২৪০ রানে সাজঘরে ফিরেন শাকিলও, তবে আউট হওয়ার আগে তুলে নিয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি। ৪৩তম ওভারে ৫২ বলে ৫২ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরেছেন শামসির বলে ডি ককের গ্লাভসবন্দী হয়ে। এরপর শেষ পর্যন্ত অলআউট হওয়ার আগে ৪৬.৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৭০ রান তুলতে পারে পাকিস্তান। প্রোটিয়ায়দের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নিয়েছেন শামসি।
সোনালী/জেআর