জুয়ার ফাঁদে সর্বস্বান্ত তরুণ-যুবক
অনলাইন ডেস্ক: নাটোরের লালপুরে মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণরা এতে বেশি আসক্ত হচ্ছেন।
ওয়ালিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী রবিউল ইসলাম অনলাইনে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ঋণের টাকা শোধ করতে জমিসহ বাড়ি বিক্রি করেছেন। জুয়া থেকে ফেরাতে না পেরে স্ত্রী তাঁকে তালাক দিয়েছেন। এখন তিনি গ্রামছাড়া।
একই গ্রামের আরেক ব্যক্তি জানান, এলাকার অনেকে ১০ টাকা শুরু করে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছেন দেখে তিনিও জুয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
দু’দিনে তিনি ৫ হাজার টাকা খুইয়েছেন। তিনি বলেন, এখানে আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্রিকেট, ক্যাসিনো, হাউজিসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়া খেলা চলে।
ঘরে বসেই স্মার্টফোনে ওয়েবসাইটে বা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ২০০-৫০০ টাকা ডিপোজিট করেই অনলাইনে জুয়া খেলা যায়।
কিশোর থেকে শুরু করে পঞ্চাশোর্ধ্ব অনেকেই প্রচুর টাকা উপার্জনের আশায় এ ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছেন। এ তালিকায় ব্যবসায়ী-চাকরিজীবীও রয়েছেন। বেশি জড়িয়ে পড়ছেন গ্রামের উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণরা।
খেলায় আগ্রহ বাড়াতে ফেসবুক-ইউটিউবেও চলছে বিজ্ঞাপন প্রচার। ১ টাকা থেকে শুরু করে লাখ লাখ টাকায় চলে এ খেলা। শুরুর দিকে অল্প টাকা বাজি ধরে হাজার হাজার টাকা পেয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ।
পরে মুহূর্তের মধ্যেই টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে ‘ক্রিক্যা’ নামের ভার্চুয়াল জুয়ার সাইটে বেশি খেলা হচ্ছে। গত তিন মাসে লালপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের লেনদেন দ্বিগুণ বেড়েছে বলে জানায় একাধিক মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন বলছেন, ঘরে বসেই এ খেলা খেলছে অনেকে। এ কারণে থানায় কেউ অভিযোগ না করা পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ছেন।’
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরিফ আল রাজিব বলেন, দ্রুত অনলাইন জুয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনালী/জেআর