নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু: প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট নয় হাই কোর্ট
সোনালী ডেস্ক: নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের কমিটি যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, তাতে দসন্তুষ্ট নয়’ হাই কোর্ট।
রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের বেঞ্চ থেকে এ কথা জানানো হয়।
রিটকারীর আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক জানান, এ বিষয়ে জারি করা রুল প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত।
আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, প্রতিবেদনটি ‘অস্পষ্ট’। প্রতিবেদনে সুলতানা জেসমিনকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারের পর আত্মীয়-স্বজনকে জানানো হয়েছিল কি না- সে বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
এ কারণে আদালত এ প্রতিবেদনে ‘সন্তুষ্ট নয়’। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজওয়ার পার্থ।
অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক জানান, গত ১৪ অগাস্ট নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির ৩০২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাই কোর্টে দাখিল করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ৮ সদস্যের এই কমিটি হাই কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।
মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, জেসমিনকে গ্রেপ্তারের পর কখন থানায় দেয়া হয়, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ নেই। প্রতিবেদনটি অস্পষ্ট। প্রতিবেদনে সুলতানা জেসমিনকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারের পর আত্মীয় স্বজনকে জানানো হয়েছিল কি না- সে বিষয়েও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
চলতি বছরের ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। এরপর র্যাব হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
২৪ মার্চ সকালে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ২৮ মার্চ এ ঘটনায় একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
জনস্বার্থে করা এ রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, র্যাবের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
৫ এপ্রিল এ ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত র্যাব সদস্যদের দায়িত্ব থেকে আপাতত সরিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
কমিটিতে জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। গত ১৩ জুন এ ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় বেঁধে দেয় হাই কোর্ট।
সোনালী/জেআর