ঢাকা | মে ১০, ২০২৫ - ৫:৫০ পূর্বাহ্ন

ঢাকার ডিম নিয়ে ভয়াবহ তথ্য দিল গবেষকরা

  • আপডেট: Friday, October 13, 2023 - 5:00 pm

অনলাইন ডেস্ক: ধীরে ধীরে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া ডিম নিয়ে ভয়াবহ তথ্য দিল বাংলাদেশের গবেষকরা। খামারে উৎপাদিত যেসব ডিম ঢাকা শহরে পাওয়া যায়, তাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ভারী ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছেন তারা। ঢাকার প্রধান ছয়টি বাজারের ডিমের নমুনা বিশ্লেষণ করে এমনই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, সর্বোচ্চ অনুমোদিত মাত্রার (ম্যাক্সিমাম পার্মিসিবল লিমিট বা এমপিএল) চেয়ে বেশি পরিমাণে দস্তা, তামা, সিসা ও লোহা পাওয়া গেছে ডিমে। মাত্রাতিরিক্ত এসব ভারী ধাতুর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। আর এ সর্বোচ্চ ঝুকিতে আছে শিশুরা।

ঢাকা শহরের মানুষ যে ডিম খায়, তাতে ভারী পদার্থের উপস্থিতি আছে কি না, তা দেখার জন্য এই গবেষণা করা হয়। আর এ জন্য ২০২০ সালের ১২ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত মহাখালী, মোহাম্মদপুর, সাভার, মিরপুর-১, যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজার থেকে ১২টি করে মোট ৭২টি ডিম সংগ্রহ করে গবেষক দলটি।

এই গবেষণায় ডিমে ১০টি ভারী ধাতুর উপস্থিতি খোঁজা হয়। তাতে ডিমে সব কটি ধাতুরই উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি ধাতুর উপস্থিতি সর্বোচ্চ অনুমোদিত মাত্রার (এমপিএল) মধ্যে রয়েছে। বাকি চারটি (দস্তা, তামা, সিসা ও লৌহ) ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে এমপিএলের চেয়েও বেশি। ডিমে তামার এমপিএল ১০, সেখানে পাওয়া গেছে ২৪.৯ পর্যন্ত; সিসার এমপিএল ০.১, সেখানে পাওয়া গেছে ১.৯ পর্যন্ত; লোহার এমপিএল ১৭.৬, সেখানে পাওয়া গেছে ৬৪.৫৯ পর্যন্ত এবং দস্তার এমপিএল ২০, সেখানে পাওয়া গেছে সর্বোচ্চ ৩৯.২৬।

ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ, শ্বাসপ্রশ্বাসে জটিলতা, রক্তশূন্যতা, মস্তিষ্ক-কিডনি-স্নায়ুর ক্ষতিসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার জন্য দায়ী থাকে বাড়তি মাত্রায় থাকা এসব ভারী ধাতু। গবেষণায় বলা হয়েছে, ডিমে এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুঁকি তৈরি করে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান, অধ্যাপক আবদুস সামাদ ও মো. মাহমুদুল হাসান; একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক দোলন রায়, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর কেমিক্যাল গবেষণা বিভাগের খন্দকার শাহীন আহমেদ এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক স্মিতা সরকারের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডিমের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ গ্রহণ এবং ঢাকা নগরীর মানুষের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি পরিমাপ নামের সেই গবেষণা নেদারল্যান্ডসভিত্তিক চিকিৎসা ও বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল সায়েন্স ডিরেক্টের ওয়েবসাইটে গত ২৮ জুন প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক আবদুস সামাদ জানান, ভারী ধাতু বিশ্লেষণের জন্য বিসিএসআইআরের গবেষণাগার ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্লেষণের আগে নমুনা সংগ্রহ ও প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার কাজ করা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পের তহবিলের টাকায় হয়েছে গবেষণাটি।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS