নিয়ামতপুরের তালসড়কে তালপিঠা উৎসব শুরু
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: গ্রামবাংলায় উৎসব মানেই বাহারি নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন। তালের পিঠা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন বরেন্দ্র অঞ্চলের রেওয়াজ। যদিও বর্তমানে উৎসবের রং আগের চেয়ে অনেকটাই বদলে গেছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আজও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষ। আর তাই নতুন প্রজন্মকে জানাতে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র নওগাঁর নিয়ামতপুরে আয়োজন করা হয়েছে তালপিঠা উৎসব।
নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের হাজিনগর-ঘুঘুডাঙ্গা সড়কে (তালসড়ক) শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী তালপিঠা উৎসবের।
উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের এই উৎসবের আয়োজন করেছে। উৎসবের তিন দিনেই মেলা প্রাঙ্গণে সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক আয়োজন। বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই মেলার উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিন দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হবে আগামী রোববার।
উৎসবের প্রথম দিন গতকাল সকাল থেকেই আবহাওয়া ছিল বৈরি। কখনও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আবার কখনও মুষলধারে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকেই স্থানীয় লোকজন সমবেত হতে শুরু করেন পিঠা উৎসবের মিলনমেলায়। তালসড়কে তালগাছের ফাঁকে ফাঁকে ছাড়াও তালসড়কের পাশে একটি পুকুর পাড়ের চারপাশে বসা স্টলে নানা রকমের পিঠার সমাহার।
সারি সারি তালগাছের মনোরম সৌন্দর্যের সড়কটিকে পর্যটকদের কাছে পরিচিত করতে নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) আসনের সংসদ সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের উৎসাহে ২০২১ সাল থেকে তালপিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছে নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন। তৃতীয়বারের মতো এবার উৎসবটি পালিত হচ্ছে।
আয়োজকেরা জানান, এবার বিভিন্ন এলাকা থকে অর্ধশতাধিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পিঠা উৎসবে অংশ নিয়েছে। প্রায় ৩০ ধরনের তালপিঠা ছাড়াও বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বানানো বাহারি নামের পিঠাও ছিল মেলায়।
তাল দিয়ে বানানো পিঠার মধ্যে জামাই পিঠা, তালক্ষীর, পাকান, পুলি, কানমুচুরি, হৃদয়হরণ, ঝিনুক পিঠা, তালের কেক, তালের ফুলঝুরি, পাখির বাসা, তালের মাংস সিংড়া উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি পিঠার দাম ১০ থেকে ৫০ টাকা। বাড়ি থেকে বানিয়ে আনা পিঠার পাশাপাশি বিভিন্ন স্টলে পিঠা তৈরি করতেও দেখা গেছে।
বিকেলে পিঠা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, আশির দশকে যখন আমি হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম এই সড়কে তালগাছগুলো লাগিয়েছিলাম। এখন এই সড়কে একটা অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব হয়। মানুষ এ সড়ক দিয়ে যখন যায়, তালগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একটু প্রশান্তি পায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ মোরশেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।
সোনালী/জেআর