ছয়মাস || স্বর্ণালংকার বিক্রি কমেছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ
♦স্বর্ণের দাম হ্রাস-বৃদ্ধি হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ বার
অনলাইন ডেস্ক: স্বর্ণ অন্যতম বিলাসী পণ্য। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ কিনতে যান না। যে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে ক্রেতারা কেনার পরিমাণ কমিয়ে দেন।
এতে বিক্রিতে প্রভাব পড়ে। দেশে দাম রেকর্ড গড়ার পর গত ছয়-সাত মাসে স্বর্ণালংকার বিক্রি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে ১৫ থেকে ১৬ বার স্বর্ণের দাম হ্রাস-বৃদ্ধি হয়েছে।
তবে বেশির ভাগ সময়ই বেড়েছে। এর প্রভাবে মানুষ এখন ঝুঁকছেন অপেক্ষাকৃত কম দামি ধাতু রুপায়। সম্প্রতি রুপার গহনার বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতারা মনে করেন দাম বাড়লে ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করেন। বিষয়টি সব সময় এ রকম নয়। বরং দাম বাড়লে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিক্রি কমে যায়। দাম বাড়ার পেছনে ডলার সংকট, শুল্কহার বৃদ্ধিকে দায়ী করেন তারা। আগে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় প্রতি ভরিতে দুই হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে একজন যাত্রী বিদেশ থেকে ২০ ভরি বা দুটি স্বর্ণবার আনতে পারতেন।
এখন এ জন্য চার হাজার টাকা দিতে হচ্ছে এবং স্বর্ণ আমদানির পরিমাণও কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। এখন থেকে ব্যাগেজ রুলের অধীনে সর্বোচ্চ ১০ ভরি বা একটি বার আনা যাবে। নতুন এই আইনের কারণে একদিকে দাম বেড়েছে, অন্যদিকে কমেছে জোগান।
বাজুসের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্সের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ডলারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণের বাজারে। দাম বাড়লেও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মুনাফার হার বাড়েনি। বিয়েশাদি ছাড়া এখন আর কেউ স্বর্ণকারের দোকানে আসেন না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গহনার দাম বাড়ার কারণে বিক্রি অন্তত ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে দুশ্চিন্তা ভর করেছে।
অর্থনীতিবিদরাও মনে করেন, স্বর্ণালংকার বিক্রি কমার পেছনে দায়ী অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় অনেককেই গহনা কেনার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
কেউ বর্তমান দর দেখে দুই মাস পর একটি গহনা বানানোর কথা ভেবেছিলেন। ভরিতে হঠাৎ ১০ হাজার টাকা বেড়ে গেলে তাঁর পক্ষে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। সব পণ্যেরই দাম চড়া। নিত্যপণ্যই যেখানে কিনতে হাঁসফাঁস, বিলাসিতায় কাটছাঁট তো হবেই।
সোনালী/জেআর