ঢাকা | নভেম্বর ২১, ২০২৪ - ১১:৪১ অপরাহ্ন

ঝড়ে উত্তরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

  • আপডেট: Thursday, June 22, 2023 - 8:00 am

অনলাইন ডেস্ক: ঝড়বৃষ্টিতে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ ব্যাপক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতে নওগাঁ, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, পঞ্চগড় ও সিরাজগঞ্জে সাতজন নিহত হয়েছেন।

এদিকে অবিরাম বর্ষণ ও উজানের ঢলে দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জে বাড়ছে নদনদীর পানি। এসব জেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটে ৪ হাজার ও কুড়িগ্রামে দেড় শতাধিক পরিবার। নদীভাঙন চলছে ২৬টি পয়েন্টে। লালমনিরহাটে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা এসব খবর পাঠিয়েছেন।

দিনাজপুর : বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টিতে ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের চারটি ইউনিয়নে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কয়েক মিনিট স্থায়ী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে ঘরবাড়ি, উড়ে গেছে ঘরের টিন, ভেঙে গেছে অসংখ্য গাছপালা।

নওগাঁ : জেলার রানীনগরে বজ্রপাতে শামিউল আলম (১০) ও রিফাত হোসেন (৩) নামে দুই সহোদর নিহত হয়েছে। গতকাল উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই ওই গ্রামের লাভলু ফকিরের ছেলে।

দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির উঠানে শামিউল ও রিফাত খেলা করছিল। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যায়।

টাঙ্গাইল : জেলার গোপালপুরে বজ্রপাতে ফজলুর হক (৫০) ও আবুল কাশেম (৪০) নামে দুই কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের বাইশকাইল এবং উত্তর পাথালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ফজলুর হক উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের বাইশকাইল গ্রামের জহুর আলীর ছেলে এবং আবুল কাশেম উত্তর পাথালিয়া গ্রামের মৃত আবদুল ছামাদের ছেলে। ফজলুর হক গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতের শিকার হন। আবুল কাশেম মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হন।

ঝিনাইদহ : জেলার হরিণাকুে বজ্রপাতে গোলাম আলী নামে কৃষক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আলম মামুন নামে আরও এক কৃষক। এ সময় গোলাম আলীর দুটি গরুও মারা যায়।

গতকাল উপজেলার পারদখলপুর গ্রামের সাইতনতলা মাঠে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক গোলাম আলী মাঠে গরু চরাচ্ছিলেন। এ সময় হালকা বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই গোলাম আলী মারা যান।

পঞ্চগড় : জেলার তেঁতুলিয়ায় বজ্রপাতে আবদুস সালাম (৪০) নামে একজন নিহত হন। গতকাল ভজনপুর ইউনিয়নের পুহাতুগছ এলাকায় ভেরসা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

আবদুস সালাম পেশায় দিনমজুর। তিনি ভেরসা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

লালমনিরহাট : তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চরাঞ্চলের ৪ হাজার পরিবার ফের পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের সানিয়াজান নদী পার হতে গিয়ে রাজু (১৮) নামে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছেন। রাজু উপজেলার দালালপাড়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে দুধকুমার নদ ও তিস্তা নদীর পানি। পাউবো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪৫ সেমি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেমি. নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদনদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি প্রবেশ করেছে চর ও দ্বীপচরগুলোয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় শতাধিক পরিবার। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যে জানা যায়, আগামী এক সপ্তাহ ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাবে।

নদের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন এবং চিলমারীর নয়ারহাট ইউনিয়নসহ চরাঞ্চল সাময়িক প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বগুড়া : জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা আতঙ্কে অপরিপক্ব পাট কাটছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দু-এক দিনের মধ্যেই মাঠের ফসল পানিতে ডুবে যাবে।

এতে পাট নষ্ট হতে পারে। কয়েক দিনের পানি বৃদ্ধিতে এ উপজেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নিচু জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে।

সিরাজগঞ্জ : কয়েক দিন ধরে সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। সেই সঙ্গে বাড়ছে করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়াল নদীর পানি। যমুনার পানি আরও দু-তিন দিন বাড়তে পারে, জানিয়েছে পাউবো।

এদিকে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে রিয়াদ (২১) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। যমুনা নদীর ক্রসবার বাঁধ-৩ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রিয়াদ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কল্যাণী গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

সোনালী/জেআর