ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৫:০৪ পূর্বাহ্ন

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চ্যালেঞ্জ || মাঠে সক্রিয় ১৪ দল

  • আপডেট: Tuesday, June 13, 2023 - 3:00 pm

জগদীশ রবিদাস: ইসি ঘোষিত পাঁচ সিটির মধ্যে ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালের ভোট। গাজীপুর সিটি বাদে বাকি অন্য দুই নগরেই মেয়রের চেয়ার নিজেদের দখলে রেখেছে ১৪ দল সমর্থিত আ’লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। শেষ ধাপে এবার রাজশাহী ও সিলেট নগরের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ জুন।

রাজশাহীর নির্বাচনে ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের বিপরীতে এবার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বললেই চলে। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় লিটনকে সেভাবে প্রচারণা চালাতে হবে না, এমনটিই অনুমেয় ছিল রাজশাহীবাসীর। তবে সেই অনুমানে গুড়ে বালি দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: পাঁচ বছর পর আরো কর্মচঞ্চল শহর হবে রাজশাহী: লিটন

এ নির্বাচনকে কোনোভাবেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না খায়রুজ্জামান ও তার ১৪ দলীয় জোটসঙ্গীরা! তারা সকলেই বিরামহীন ছুটছেন শহরের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কারণ, এবারের নির্বাচনে তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে; ভোটারদের ভোটকেন্দ্রমুখী করা।

জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক সক্ষমতা বিবেচনায় ১৪ দলের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে অন্য তিন প্রার্থী। এরপরও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতেই দিনরাত পরিশ্রম করছেন তিনি। স্থানীয় ১৪ দলের নেতারাও এক্ষেত্রে ঘরে বসে নেই। ইতিমধ্যেই ১৪ দলের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির নেতাকর্মীরাও একই ‘এজেন্ডা’ নিয়ে মাঠে নেমেছেন সক্রিয়ভাবে।

গাজীপুরে নৌকার প্রার্থীর শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী থাকার পরও সেখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশের কম। সদ্য অনুষ্ঠিত খুলনা ও বরিশালেও ভোটার উপস্থিতি খুব সন্তোষজনক নয়! রাজশাহী শহরে জামায়াত-বিএনপির কর্মী- সমর্থক খুব কম আছে; এটি বলার অবকাশ নেই। এখানে বিএনপির কোনো প্রার্থী না থাকায় তারা ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের যেতে নিরুৎসাহিত করার মতো ‘পরোক্ষ কৌশল’ অবলম্বন করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ১৪ দলের নেতারা।

আরও পড়ুন: নৌকায় ভোট চেয়ে পাড়া-মহল্লায় ছুটছেন লিটন

এ কারণেই মূলত চোখে ঘুম নেই খায়রুজ্জামান লিটনের। তফসিল ঘোষণার আগেই শহরজুড়ে তিনি প্রায় ৭০টি’র মতো মতবিনিময় সভা করেছেন। এখনও প্রচারণা চালাচ্ছেন বিরামহীনভাবে। পাশাপাশি ১৪ দলকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিদিন গণসংযোগ করছেন তিনি।

গতকালকেও পথসভা শেষ করে বিকালে তিনি প্রচারণায় বের হন। একটি ট্রাকে করে তাকে বিভিন্ন এলাকায় প্রাচারণা করতে দেখা যায়। সেখানে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত থাকছেন। প্রতিদিনই তিনি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য রাখছেন। দলীয় ও জোটের নেতাকর্মীদেরও এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁর এবার নির্বাচনি স্লোগান, ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’।

আরও পড়ুন: সিটি নির্বাচন: একাট্টা ১৪ দল

এনিয়ে জানতে চাইলে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু সোনালী সংবাদকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে অবশ্যই ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে! তবে এটিকে শুধুমাত্র ‘শঙ্কা’ হিসেবে নিলেও বাস্তবে এমনটাই হবে, এভাবে আমরা ভাবছি না। কারণ, এর বিরুদ্ধে আমরা সক্রিয়ভাবে মাঠে আছি।’

আরও পড়ুন: সংগ্রামী মানসিকতা নিয়ে ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে: বাদশা

লিকু আরো বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেহেতু ভোটে আসেনি; সেহেতু ষড়যন্ত্র তো তারা করবেই। এটিকে মেনে নিয়েই আমরা ভোটের মাঠে আছি। স্থানীয় ১৪ দলের নেতাকর্মীরা এনিয়ে অত্যন্ত সজাগ। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করছি। মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। সাড়াও পাচ্ছি। সুতরাং, ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে আসে এবং কারো দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়, সেটিকে অবশ্যই গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছি। জোটের সকলে এক হয়ে যেভাবে কাজ করছি; আশা রাখি- ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে অবশ্যই সন্তোষজনক হবে!’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে ১৪ দলের মেয়র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমি মনে করি এবারের নির্বাচনে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট কাস্ট হতে পারে। কারণ, ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরাও ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। এ ছাড়াও নগরে এবার ৩০ হাজার নতুন ভোটার রয়েছেন। তারা নিশ্চয়ই নৌকার পক্ষেই নিজেদের সমর্থন দেবেন।’

আরও পড়ুন: সিটি করপোরেশনের দুঃসময়ে এমপি বাদশা পাশে দাঁড়িয়েছেন: মেয়র লিটন

তিনি বলেন, ‘তাই বলে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। ষড়যন্ত্র হতেই পারে! আওয়ামী লীগের ভোটাররা তো ভোট কেন্দ্রে আসবেই। তবে অনেকেই ভাবছেন, এমনিতেই নৌকা জিতে যাবে। তাই আমরা অনুরোধ করছি, ভোট কেন্দ্রে না আসার মতো ভুলটি করবেন না। আমি আশাবাদী, উৎসবমুখর পরিবেশেই রাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

সোনালী/জেআর