নির্বাচন কমিশনে বদলি আতঙ্ক, চলছে তদবির
অনলাইন ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মকর্তাদের বদলি করা হচ্ছে। আর কিছু কর্মকর্তার বদলির ফাইল প্রস্তুত হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে দক্ষ কর্মকর্তাদের হঠাৎ বদলি করলে সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
আবার অনেকেই হঠাৎ বদলির কারণে পরিবার-সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়ছেন। অনেক সন্তানের পড়ালেখাও হুমকিতে পড়েছে। অনেকে বদলি ঠেকাতে তদবিরও করছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
যদিও ইসি বলছে, রুটিন বদলি কার্যক্রম চলছে। অনেকেই তিন বছরের অধিক সময় একই জায়গায় আছেন। আবার অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও রয়েছে। তাই তাদের বদলি করা হচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি সাত মাস। ২০২৪ সালের জানুয়ারির শুরুতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি বছরের নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
এ জন্য সেপ্টেম্বরে শুরু হবে ভোটের মূল তোড়জোড়; সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কবে হবে ভোট গ্রহণ। তবে সব রাজনৈতিক দলকে ভোটে আনতে একাধিক তারিখ ও তফসিল প্রস্তুত রাখবে কমিশন।
এক্ষেত্রে নভেম্বরের শুরুতে তফসিল দিয়ে ভোট গ্রহণের তারিখ পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হতে পারে। সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে এক সপ্তাহ পেছানো হয়; পরে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোট হয়। অন্যদিকে ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদের ৩০০ আসনে ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণের। সেই অনুযায়ী কাগজ সংগ্রহসহ অন্যান্য নির্বাচনী মালামাল কেনাকাটার কার্যক্রম চলছে।
এ ছাড়া নির্বাচনকালীন মাঠপ্রশাসন ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগেই ডিসি-এসপি ও ওসিদের রদবদল করা হতে পারে। ডিসিরা সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে থাকে ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন ইসি সচিব আসার পরে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১৬০ জনকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া চলতি মাসেও প্রায় ২০ জন উপজেলা নির্বাচন অফিসার বদলি করা হয়েছে। সব মিলে দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ঠুনকো কারণে বদলি করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও দোষ ধরা হচ্ছে। এ কারণেও কাউকে কাউকে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে বদলি আতঙ্কে কাজে মন নেই নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে তাদের। গত ঈদের ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফেরার পর থেকেই কারও চোখে-মুখে খুশির রেশ নেই। মুখে রা নেই, গোমড়া-ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন সবাই। তবে কেউ প্রকাশে কিছুই বলতে পারছেন না। ইসি সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও কোনো কথা বলছেন না।
এর আগে ইসির কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র রাখা নিয়ে আন্দোলন করে অনেক কর্মকর্তাকে নোটিস করা হয়েছে। কাউকে কাউকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বদলি আতঙ্কে বেশি রয়েছেন ইসির সহকারী সচিবরা। অন্যদিকে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর গায়ে বিএনপি-জামায়াত পন্থির তকমা লেগে আছে, তারাও বিপদে আছেন।
সোনালী/জেআর