আড্ডা দেওয়ার কথা বলে বন্ধুকে অপহরণ, টাকা না পেয়ে হত্যা
অনলাইন ডেস্ক: সাভারের আশুলিয়ায় অপহরণের পর মুক্তিপণের ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে এক কলেজছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারই বন্ধুরা।
নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অপহরণ হওয়ার ১০ দিন পর হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ময়েজ হোসেন ওরফে পরান (২২), তার সহযোগী মো. সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পি (২৩) ও আকাশকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়ার মোজার মিল এলাকার শিববাড়ি ইস্টার্ন হাউজিং জলাশয় থেকে হৃদয়ের বস্তাবন্দি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার পরান মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে। তিনি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন। বাপ্পি ও আকাশ শ্রমিক।
র্যাব ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ মে বিকেলে পরান, বাপ্পি ও আকাশ হৃদয়কে আড্ডা দেওয়ার কথা বলে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তাকে রশি দিয়ে বেঁধে একটি কক্ষে আটকে রাখে।
তারা হৃদয়ের মোবাইল ফোনে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরও টাকা না দেওয়া হৃদয়ের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অপহরণকারীরা।
পরে তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে রিকশা করে মোজারমেল এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয় । পরে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে ছেলের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় প্রবাস থেকে দেশে ফিরেন বাবা ফজলুল হক মিয়া। গত ১১ মে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আশুলিয়ার শ্রীপুর মোজারমেল এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা পরান ও ভুক্তভোগী হৃদয় একই এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
হৃদয়ের বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি, এজন্য গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিলেন।
তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা পরানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধারসহ হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সোনালী/জেআর