রাজশাহী নগরীতে দল বেঁধে অটোরিকশা ছিনতাই করতেন তারা!
অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহী নগরীতে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছিনতাইকারী চক্রের ৮ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা দল বেঁধে অটোরিকশা ছিনতাই করতেন।
মঙ্গলবার (০৯ মে) রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মুকুল হোসেন (৩৫), রাব্বী আলী (২৮), শিহাব আলী (২১), নাজমুল ইসলাম (২৪), নাজিউর রহমান মৃদুল (২২), রকি (২৮), সুমাইয়া আক্তার রিমা (২৪) ও আশরাফ আলী (৫৪)।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম জানান, মতিহার থানাধীন পশ্চিম বুধপাড়া এলাকার অটোরিকশা চালক শাহাজ উদ্দিন (৪৫) গত ৬ মে রাতে রাজশাহীর সাহেববাজার রহমানিয়া হোটেলের সামনে ভাড়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
এসময় তিন ছিনতাইকারী যাত্রীবেশে তাকে কাটাখালি থানার মাহেন্দ্রা পুলিশ ফাঁড়ী এলাকায় ভাড়ায় যাওয়ার কথা বলেন।
পরে চালক ওই তিনজনকে নিয়ে রওনা হন। তারা মাহেন্দ্রা বাইপাস মহাসড়ক এলাকায় পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা তাকে থামতে বলে। সেখানে তারা অটোরিকশা থেকে নেমে একটি দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে আবার ফিরে আসে। হঠাৎ যাত্রীবেশে অটোরিকশার পেছনে বসে থাকা দুইজন ছিনতাইকারী চালক শাহাজ উদ্দিনকে গামছা দিয়ে দুই হাত বেঁধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কিল ঘুষি মারতে থাকে।
এ সময় তারা তাকে খুন করার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন জোর করে কেড়ে নিয়ে দৌঁড়ে হরিয়ানের দিকে চলে যায়। অটোরিকশা সামনে যাত্রীবেশে বসে থাকা তাদের অপর সহযোগী অটোরিকশা নিয়ে বেলপুকুরের দিকে চলে যায়। পরে তিনি এ ঘটনায় কাটাখালি থানায় অভিযোগ করেন।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের একটি টিম আসামিদের গ্রেপ্তার ও অটোরিকশা উদ্ধারে অভিযানে নামে। কাটাখালি থানার টিম আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় অপরাধীদের সনাক্ত করে। এরপর প্রথমেই কাটাখালি থানার শ্যামপুর থান্দারপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিহাব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিহাবের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিহাব জানায়, তার অপর দুইজন সহযোগী মুকুল ও রাব্বী। তারা তিনজন এক সঙ্গে এ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটায়। শিহাবের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ শ্যামপুর থান্দারপাড়া থেকে মুকুল ও রাব্বীকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা তিনজন ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার করে। তারা আরও জানায় ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি বিক্রির জন্য তাদের সংঘবদ্ধ চক্রের সহযোগী নাজমুল হোসেন, নাজিউর রহমান মৃদুল, রকি ও সুমাইয়া আক্তার রিমাকে দিয়েছে। তারা অটোরিকশাটি খুলে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করার জন্য সুমাইয়া আক্তারের বাড়িতে রেখেছে বলেও জানায়।
তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সুমাইয়া আক্তার রিমা ও তার স্বামী রকি এবং ভাই নাজমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। এসময় সেখান থেকে অটোরিকশার ব্যাটারিগুলো পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন অংশ জব্দ করা হয়। এরপর অপর সহযোগী মৃদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, তারা একটি ছিনতাইকারী চক্র। তারা দল বেঁধে ছিনতাই করে। অটোরিকশার ব্যাটারিগুলো তাদের সহযোগী আশরাফ আলীর মোটর পার্টসের দোকানে বিক্রির জন্য দিয়েছে। এরপর পুলিশের আশরাফকেও গ্রেপ্তার করে। পরে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।
সোনালী/জেআর