যুক্তরাষ্ট্র র্যাবকে সহায়তা করেছে ২০১৮ সালে: যুক্তরাষ্ট্র
অনলাইন ডেস্ক: মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ী হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকায় যুক্তরাষ্ট্র র্যাবকে সহায়তা করা ২০১৮ সালেই বন্ধ করে দিয়েছে বেলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ী হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকায় আমরা র্যাবকে সহায়তা করা ২০১৮ সালেই বন্ধ করেছি। এ সংস্থাকে সহায়তা করা আমরা বন্ধ করেছি প্রায় চার বছর আগেই। ‘গুরুতর ও ভয়ঙ্কর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে র্যাব ও এর সাবেক-বর্তমান আট কর্মকর্তার ওপর ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলেন মুখপাত্র।
র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের তখনকার আইজিপি বেনজীর আহমেদের পাশাপাশি র্যাবের তখনকার মহাপরিচালক ও নতুন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এর নামও সেই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে গত ৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে র্যাব গঠন ও প্রশিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
দেশটির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্রশস্ত্র ও প্রযুক্তিগত সহায়তার পরও র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ওই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, র্যাবের উপরে তারা যখন স্যাংশন দিল, আমরা প্রশ্নটা হল, র্যাব সৃষ্টি করেছে কে? র্যাব সৃষ্টিতো আমেরিকার পরামর্শে। আমেরিকাই র্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে, আমেরিকা তাদের ট্রেইনিং দেয়, তাদের অস্ত্রশস্ত্র, তাদের হেলিকপ্টার, এমনকি তাদের ডিজিটাল সিস্টেম, আইসিটি সিস্টেম–সবই আমেরিকার দেয়া। তো, আমেরিকা যখন স্যাংকশন দেয় বা আর কোনো কথা বলে বা অভিযোগ আনে, আমার একটাই কথা–যেমন আপনারা ট্রেইনিং দিয়েছেন, তেমন তারা কার্যক্রম করেছে। কাজেই আমাদের করার কী আছে? আপনাদের ট্রেইনিংটা যদি একটু ভালো হত, তাহলে না কথা ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সূত্র ধরে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইসের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মন্তব্য’ জানতে চান এক সাংবাদিক।
এর জবাবে র্যাব ও সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দুই সাবেক কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা মনে করিয়ে দেন নেড প্রাইস।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিংবা দক্ষিণ এশিয়া কিংবা সারা বিশ্বে, আমরা মানবাধিকারকে পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রেখেছি। সে অনুযায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘন যখন যেখানে হয়, তার সাথে জড়িতদের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ ও তাদের উপর আলো ফেলার বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। র্যাবের জবাবদিহিতা ও সংস্কারের জন্য এবং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লংঘন রুখতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও বাংলাদেশ পুলিশের সাথে এখনও কাজ করার কথা এর আগে এক অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছিলেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
মানবাধিকারের মৌলিক নীতির আলোকে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে মুখপাত্র বলেন, দায়ীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনার মত করে অপরাধ মোকাবেলা, বিচার কাজ পরিচালনা ও আইনের শাসন নিশ্চিতে আমরা দেশগুলোকে সহযোগিতা করে যাব। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে আমাদের প্রশিক্ষণ সেই মৌলিক নীতিকেই তুলে ধরে।