ঢাকা | মে ১০, ২০২৫ - ৮:৫২ অপরাহ্ন

দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ১৪ জন আহত

  • আপডেট: Monday, September 5, 2022 - 11:38 pm

পুঠিয়া প্রতিনিধি: পুঠিয়ায় ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবল টুর্নামেন্ট (হাইস্কুল ও মাদ্রাসা) খেলাকে কেন্দ্র করে দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ১৪ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

ঘটনার পরেরদিন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা সাতবাড়িয়া স্কুলে তালাবদ্ধ করে রাখেন। সেই সাথে বিক্ষুদ্ধরা একজন শিক্ষকের দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের তদারকিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। গত রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় উপজেলার পচামাড়য়া হাইস্কুল মাঠে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হচ্ছে, নারায়ন, শীতল, রাম চন্দ্র, শান্ত, মাহিন, ইমন, প্রান্ত, শিশির, হৃদয়, হেমন্ত, বাদল, সজল ও কৌশিক। এরা সকলেই নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র।

শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, গত রবিবার বিকালে পচামাড়িয়া ও সাতবাড়ি হাইস্কুলের মধ্যে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সে টুর্নামেন্টে উভয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। পরে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। মারামারির ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে সাতবাড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, গত রবিবার বিকালে পচামাড়িয়া সাথে সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের খেলা চলছিল। খেলা চলাকালীন সময় পচামাড়িয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের পক্ষে পাঁচজন কলেজ শিক্ষার্থীকে খেলার মাঠে নামায়। এ ঘটনায় সাতবাড়িয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদ করলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। এক পর্যায়ে পচামাড়িয়া স্কুলের পক্ষে একজন খেলোয়াড় সাতবাড়িয়া স্কুলের খেলোয়াড়ের কানে ঘুষি মারে। এতে ওই শিক্ষার্থীর রক্তপাত ঘটে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাঠের আশেপাশে থাকা দর্শক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে সাতবাড়িয়া হাইস্কুলের ১২ জন শিক্ষার্থীকে মারধর করে আহত করা হয়। আমরা আহতদের উদ্ধার করে ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করিয়েছি। তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে সাতবাড়িয়া স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এসে শ্রেণিকক্ষে তালা মারেন। সেই সাথে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ লোকজন পচামাড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষক আফজাল হোসেনের দোকান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর করে। বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে অবহিত করেছি।

তবে পচামাড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন মণ্ডল বলেন, গতকাল অনাকাঙ্খিত একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন দুই গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আমাদের স্কুলের একজন শিক্ষকের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তারা। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। স্কুলের খেলাধূলায় কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি খতিয়ে দেখছি।

উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা আক্তার জাহান বলেন, খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আব্দুল বারী বলেন, দুটি স্কুলের খেলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এর জেরধরে সোমবার সকালে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার বিকালে সাতবাড়িয়া স্কুলের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

 

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS