‘বিশ্ববিদ্যালয় পোশাক নয়, জ্ঞান চর্চার জায়গা’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্ত্তী বলেছেন, ‘আমার পোশাক আমার, আপনার পোশাক আপনার। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পোশাক চর্চার জায়গা নয়, এটি হচ্ছে জ্ঞান চর্চার জায়গা। নারীর পোশাক যদি পুরুষের আত্মনিয়ন্ত্রনে ব্যাঘাত ঘটায়, তবে তারা যখন জ্ঞান আহরণের জন্যে ইউরোপে যাবে তখন কিভাবে আত্মনিয়ন্ত্রন করবে? তারা তো সেখানে বার বার মারা পড়বে। এমনকি পাশের দেশ ভারতে গিয়েও তারা সুষ্ঠুভাবে ফিরে আসতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে নারীর পোশাকের উপর পুরুষতান্ত্রিক আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ^বিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে পোশাকের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য যেন আক্রান্ত না হয় সে দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা তারিকুল আহসান বলেন, আজকে সারা পৃথিবীর মানুষ কত বৈচিত্র্যময় পোশাক পরে। প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে। আর পোশাক ব্যক্তিস্বাধীনতার ব্যাপার। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক রুকসানা বেগম বলেন, নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা ইমানের অঙ্গ। আর পরিচ্ছন্ন থাকতে হলে পোশাকের প্রয়োজনীয়তা আছে। আমি আমার নিজের পোশাক কি পরবো আর কি পরবো না সেটা আমার নিজের ব্যক্তিগত বিষয়। তাই আমার পোশাক আমিই নির্ধারণ করবো।
এসময় ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’, ‘পোশাক নিয়ে বিচারপতির অসাংবিধানিক বক্তব্য প্রত্যাহার কর’, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান গবেষণার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এটা পোশাক নিয়ে নসিহত করার কোনো জায়গা নয়’, ‘সংস্কৃতির মত পোশাক বৈচিত্র্যময়’, ‘পুরুষদের পোশাক নিয়ে আমরা তো কিছু বলি না! পুরুষ কেন বলে?’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক মোবাররা সিদ্দিকার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রওশন জাহিদ, ড. আমিরুল ইসলাম ও ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ইতি আক্তার মুন। এসময় বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।