বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ প্রসাধনী উৎপাদন
পুঠিয়া প্রতিনিধি: পুঠিয়ায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে ব্যাঙের ছাতারমত গড়ে উঠছে প্রসাধনী কারখানা। আর ওই কারখানা মালিকরা দেশি-বিদেশি নামিদামী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী তৈরি করে বাজারজাত করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর গুলো বছরে এক দুইবার ওই কারখানা গুলোতে অভিযান চালায়। সে সময় বিভিন্ন অবৈধ মালামাল জব্দ ও কারখানা মালিকদের নামমাত্র জেল জরিমানা করে চলে যায়। কিন্তু পরেরদিন থেকেই কারখানা গুলোতে আবারও অবৈধ প্রসাধানী উৎপাদন শুরু করে। এদিকে অবৈধ ওই কারখানায় গুলো বন্ধ করতে গত প্রায় ৬ বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি নির্দেশ দেয় হয়। এদিকে নিদেশনা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তার বাস্তবায়ন হয়নি।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, গত দেড়যুগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দুই ডজন প্রসাধনী কারখানা গড়ে উঠেছে। আর সেই কারখানা গুলোতে দেশী বিদেশী নামীদামী কোম্পানির মোড়কে নকল ও ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করছে। যা মানব দেহের ক্ষতিকারক বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার হচ্ছে। যার বেশীর ভাগ কারখানার অনিয়ম গুলো প্রমানিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তারা যথাযথ দপ্তরে সুপারিশ করেন।
এদিকে এ সকল ভেজাল ক্রীম কারখানা নিয়ন্ত্রণে গত ২০১৭ সালের ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের তৎকালিন যুগ্ম সচিব ফরিদ আহম্মদ স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করেন। পরে একই পরিপত্রটি জেলা প্রশাসক এবং পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করা হয়। যার স্বারক নং-০৩.০৭৯.০১৬.০৪.০০.২৬.২০১৬-৫৩৪ (৪)। ওই পত্রে ১২টি ভেজাল ও অবৈধ ক্রীম কারখানার নাম উল্লেখ করা হয়। এ গুলো হচ্ছে মর্ডাণ হারবাল, রুপসী গোল্ড, মেডনা স্পট ক্রীম ও হারবাল, চ্যালেঞ্জার হারবাল ও প্রসাধনী, ডিজিটাল হারবাল, সীনা স্পট ক্রীম, রোমাঞ্চ হারবাল ও স্পটক্রীম, ডায়মন্ড স্পট ক্রীম, ঝিলিক সলিসন, লাউস ষ্টার গোল্ড ও আইকন হারবাল, লাকি সেভেনস্পট ক্রীম এবং জ্যোতি বিউটি হারবাল। ওই পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ক্রীম কারখানার মালিকরা বিএসটিআই কর্তৃক নামমাত্র দু’একটি পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন নিয়েছেন। অথচ কারখানার মালিকরা অতি গোপনে সেখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে অবৈধ ও অতি নিন্মমানের প্রসাধনী উৎপাদন করে বাজারজাত করছেন।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, কারখানার মালিকরা মানব দেহের ক্ষতিকারক স্টিলম্যান, টিয়ারিক এসিড, আইসোপ্রোপাইল, মাইরিস্টড ও সাধারন পানির মিশ্রণে রং ফর্সাকারী ক্রীম ও বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরি করছেন। এ সকল পণ্য ক্রয় করে বিভিন্ন বয়সী নারীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হোন।
পরিপত্রে আরো বলা হয়, স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতারা প্রসাধনী কারখানার মালিকের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে আসছে। যার কারণে ওই অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, যেখানেই ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করা হয়, সেখানেই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আর ওই কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।