ঢাকা | মে ৪, ২০২৫ - ১০:৩৬ অপরাহ্ন

রাবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী গ্রেপ্তার

  • আপডেট: Saturday, July 30, 2022 - 11:15 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

নগরীর ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে স্বামীসহ থাকতেন ওই শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীর নাম রিক্তা আক্তার (২১)। তার স্বামীর নাম আবদুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বি। সে রাবির ফলিত গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পুলিশ রাতেই তাকে ও তার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হেফাজতে নিয়েছিল।

এ ঘটনায় মামলা করেছেন রিক্তার বাবা লিয়াকত জোয়ার্দ্দার। গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি হিসেবে আগে থেকেই আটক ওই ছাত্রীর স্বামী আবদুল্লাহ ইশতিয়াক রাব্বিকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন।

রিক্তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। তার স্বামী ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। আড়াই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।

ওই বাসার নিচতলার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা কেউ রিক্তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেননি। ওই কক্ষ থেকে শোরগোল শুনে তারা সেখানে গিয়ে রিক্তাকে বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। সেখানে রিক্তার স্বামী আবদুল্লাহ ইশতিয়াক ও আলামিন নামে তার এক বন্ধুকে দেখতে পান। তারা জানায়, রিক্তায় গলায় ফাঁস দিয়েছেন। রিক্তার গলা থেকে ওড়না খোলা হয়েছে। এরপর রিক্তাকে রিকশায় করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাড়ির মালিক আবদুর রশিদ জানান, চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় তিনি থাকেন। নিচতলায় ছয়টি পরিবার থাকে যারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আবদুল্লাহ ইশতিয়াক ও রিক্তা আক্তার গত ২৯ জুন এই বাসায় উঠেছিলেন। রাত পৌনে ১২টার দিকে শোরগোল শুনে তিনি নিচে নামেন। তিনি দেখার আগেই রিক্তা আক্তারকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর দুই পক্ষের পরিবারের সদস্যই রাজশাহীতে এসেছে। ছাত্রীর পরিবার থেকে বলা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে থেকে দুজনের প্রেম ছিল। দুজনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর রিক্তা আক্তারকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নেয়নি বলে অভিযোগ তাদের।

রিক্তা আক্তারের বাবা লিয়াকত জোয়ার্দার বলেন, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন রিক্তাকে গৃহবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এ কারণে তার মেয়ে ওই বাড়িতে যেত না। তিনিই মেয়ের খরচ বহন করতেন। তিনি মেয়েকে একটি মুঠোফোন কিনে দিয়েছেন, সেটিও তার স্বামীর কাছে থাকত। নিজের মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার স্বামীর মাধ্যমে কথা বলতে হতো। তার মেয়ে আত্মহত্যা করেননি। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ বাবার।

আবদুল্লাহ ইশতিয়াকের বাবা ইউনুস আলী বলেন, তার ছেলে ও পুত্রবধূ দুজনেই লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকত। এ কারণে পুত্রবধূ ঝিনাইদহে কম আসত। তবে দুই-তিনবার এসেছে। ছেলেও যেত। গত বৃহস্পতিবার তিনি রাজশাহীতে গিয়েছিলেন। তাদের কাছে থেকেছেন। তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য ছিল না। তারা দুজনেই তাকে আপ্যায়ন করেছেন।

নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী আবদুল্লাহ ইশতিয়াককে থানায় আনা হয়। এরপর মামলা হলে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের বিষয়ে ওসি বলেন, ময়নাতদন্ত হয়েছে। এখনো তারা প্রতিবেদন পাননি।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS