ঢাকা | ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫ - ৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে তীব্র শীতে দুর্ভোগে মানুষ, চাষিরা চিন্তিত

  • আপডেট: Sunday, December 28, 2025 - 10:08 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া।

এতে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

রাজশাহীতে গতকাল সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ছিল ঘন কুয়াশা । উত্তরের হিমেল বাতাসে সারাদিন শীত অনুভূত হয়েছে। দিনের বেলাতেও মানুষজনকে গরম কাপড় পরে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। শীতের প্রকোপ বৃদ্ধিতে এই অঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। রাত গভীর না হতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। শিশু ও বয়স্ক মানুষরা এই শীতে পড়েছেন বেশি সমস্যায়। তারা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা অসুখে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে বয়স্ক ও শিশুদের ভিড় দেখা যাচ্ছে বেশি। চিকিৎসকরা এসময় একটু সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়া শুরু হওয়ায় রাজশাহীর আলু ও বোরো চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এই আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে আলুতে আরলি ব্লাইট ও বোরোর বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি দেখা দিতে পারে। এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় কৃষিবিদরা এই অঞ্চলের চাষিদের পাশে থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

শীতের তীব্রতা বৃদ্ধিতে দোকানিরা গরম কাপড়ের পশরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতারাও ভিড় করছেন গরম কাপড়ের কেনাকাটায়। নিম্নআয়ের মানুষরা ভিড় করছেন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। এই সুজোগে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ১৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে ফারাক কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে শীতের প্রকোপ আরও বেড়েছে। ভোর ও রাতের দিকে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে নেমে যাওয়ায় অনেক এলাকায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে, বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।

বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও শ্রমজীবী মানুষ বেশি কষ্টে পড়ছেন। শীত নিবারণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক এলাকায় সকালে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। গতকাল রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিশোরগঞ্জের নিকলী এলাকায়। এতে করে মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমান শীতপ্রবাহের প্রভাব আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। বিশেষ করে রাত ও ভোরে শীতের অনুভূতি বাড়বে এবং কুয়াশার কারণে জনজীবনে ভোগান্তি তৈরি হতে পারে। প্রয়োজন ছাড়া ভোরের দিকে বাইরে বের না হওয়ার এবং যানবাহন চলাচলে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আজকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা ও নিম্নাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।