চারঘাটে দাম না পেয়ে আম গাছ কেটে ফেলছেন কৃষকেরা
স্টাফ রিপোর্টার: গত কয়েক বছরে আমের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় একের পর এক আম বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এই উপজেলায় কয়েক’শ হেক্টর আম বাগান কেটে ফেলা হয়েছে। আমের ন্যায্য দাম, অস্বাভাবিক আম উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি ও তুলনামূলক ভালো ফলন না হওয়ার কারণে আম গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
অন্যান্য ফসলের ভালো দাম পাওয়ায় আম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে উজাড় করা হচ্ছে আমের বাগান। আমচাষী ও ব্যবসায়ীদের দাবি, গত ৫/৬ বছর ধরে আম বাগান থেকে আসেনি কাক্সিক্ষত কোন সুফল। ফলে চাঙা হয়নি আমের বাজার। তাই বাধ্য হয়ে আমবাগান কেটে ধান, গম, সবজি, আদা, হলুদ, পেয়ারা, বরই, ড্রাগন ইত্যাদি চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।
চারঘাট উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চারঘাট উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার ৯শ ৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। গত ৫ বছরে এই উপজেলাতে কেটে ফেলা হয়েছে প্রায় এক’শ হেক্টর জমির আমের বাগান। আম প্রধান এলাকায় এভাবে আমের গাছ কেটে ফেলায় অর্থনৈতিকভাবে এই অঞ্চল ক্ষতির মুখে পড়ছে। অনেক আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা আম ব্যবসা ও চাষ বন্ধ করে দিয়ে এখন বিকল্প পেশার দিকে ছুটছেন।
চারঘাট উপজেলার বুদিরহাট এলাকার আম চাষি আব্দুল মান্নাফ বলেন, প্রায় সাড়ে ৫ বিঘা বিঘা জমিতে খিরসাপাত, ল্যাংড়া, আম্রপালির মতো জাতের আম গাছ রোপণ করেছিলাম। সেই বাগান এবার কেটে ফেলা হয়েছে। আম উৎপাদনে এখন ব্যাপক খরচ। বছরজুড়ে খরচ করে শেষ সময়ে গাছে আসেনা কাক্সিক্ষত উৎপাদন। এতে প্রতি বছরই লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই আম বাগান কেটে অন্য ফসল ফলানোর চেষ্টায় আম বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে।
উপজেলার নওদারা এলাকার চাষি লালন সরকার বলেন, আম বছরে একটি ফসলের উপর নির্ভরশীল। নিয়মিত বাগানে ফল আসে না। উৎপাদন খরচ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু বাজারে দাম তেমন বাড়ছে না। আবার যে পরিমাণ আম ধরে, তা বিক্রি করে খরচই উঠে না। তাই অনেকটা বাধ্যই হয়ে আম বাগান কেটে অন্য ফসল করার চেষ্টা করছি।
চারঘাটের বিশিষ্ট আম ব্যবসায়ী শিক্ষক আব্দুল মান্নাফ বলেন, জেলার এই চারঘাট উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে আম হতো। এখন রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী নওগাঁ ও সাতক্ষীরা জেলায় এখন ব্যাপক আম চাষ হচ্ছে। আর এসব অঞ্চলের আম রাজশাহীর চেয়ে অনেক আগে বাজারে আগে আসে। ফলে নওগাঁ ও সাতক্ষিরা অঞ্চলের চাষি আমের ভালো দাম পান।
চারঘাট উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৮-১০ হেক্টর জমির আম গাছ কর্তন করেছে আমচাষীরা। তবে আমচাষীদের নতুন ও উচ্চ ফলনশীল জাতের আম যেমন কাটিমন, বারি-৪, ব্যানানা মেংগো, গৌরমতি জাতের আমগাছ লাগানোর জন্য নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।











