প্রবীণদের বিমার আওতায় আনার প্রতি গুরুত্বরোপ
স্টাফ রিপোর্টার: ‘প্রবীণ নাগরিকদের মর্যাদাপূর্ণ ও যত্নশীল জীবন-ব্যবস্থাপনায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে অংশিজনেরা বলেছেন, দেশের প্রবীণদের জন্য মর্যাদাসম্পন্ন নির্বিঘ্ন জীবনের নিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রবীণদের বিমার আওতায় আনতে হবে। একইভাবে পারিবারিক পর্যায় থেকে শিক্ষা, সম্পর্ক ও মূল্যবোধ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। যাতে করে শিশুরা প্রবীণদের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারে।
গতকাল বুধবার রাজশাহী জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারাএ কথা বলেন। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমনিারে সভাপতিত্ব করেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরা খাতুন। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান (যুগ্ম সচিব)। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) স ম হা সবুর আলী, বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক তাপস ফলিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সাবিনা ইয়াসমিন।
আলোচনায় অংশ নেন, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর সভাপতি ডা. ডিএম জহুরুল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক পিয়ার বক্স, দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক মো. লিয়াকত আলী. সোনার দেশ সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. বায়েজীদ হোসেন ওয়ারেছী, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক সহকারী পরিচালক জয়তুনা খাতুন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. তামান্না কবীর প্রমুখ।
সেমিনারের অংশিজনেরা বলেন, দেশে ১ কোটি ৮০ লাখ প্রবীণ জনগোষ্ঠির মধ্যে প্রায় ৭৭ লাখ প্রবীণকে সরকারের নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। প্রতিজনকে বয়স্ক ভাতা দেয়া হয় ৬৫০ টাকা। এই টাকা খুবই সামান্য। সরকারের সীমাদ্ধতাও আছে। তদুপরি সামাজিক নিরাপত্তার বাইরের জনগোষ্ঠিকেও পর্যায় ক্রমে ভাতার আওতায় আনতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ আছে যা মোট বাজেটের প্রায় ২৩ শতাংশ। সরকারের সক্ষমতার নিরিখে এই অর্থ বরাদ্দ মোটেও কম নয়।
বক্তারা বলেন, শ্রেণিভেদে প্রবীণদের সমস্যা একেক রকম। সমস্যার ধরনগুলো ধাপওয়ারি চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এরপরেই সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রবীণদের বিমার আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন। পারিবারিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বরোপ করতে হবে। পারিবারিক শিথিল বন্ধান আবারো দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর সময় এসেছে। এর মধ্যেই মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশ ও সমাজের অগ্রগতির জন্যই প্রবীণদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতার সদ্ব্যবহারে রাষ্ট্রের উদ্যোগ থাকতে হবে। একই সাথে বেসরকারি উদ্যোগকেও উৎসাহ ও সহায়তা দিতে হবে। এটি সমন্বিত উদ্য্ােগেই পারে প্রবীণদের মর্যাদা এবং তাদের স্বভিমানের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো। বার্ধক্য যতটা শারীরিক তার চেয়ে অনেক বেশি মানসিক। এই মানসিকতার পরিবর্তন আনতেও সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া যেতে পারে।
অংশিজনেরা বলেন, ইদানিং ভাল চর্চার অবনতি হচ্ছে, অন্যদিকে খারাপ চর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। এটা প্রতিরোধ করতে পারিবারিক শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ- নতুবা প্রবীণ জনগোষ্ঠির অবমাননা- অমর্যাদার অবসান আরো কঠিন হয়ে পড়বে।










