রাজশাহীতে পাখি শিকারীদের সামাজিকভাবে প্রতিহত করার আহবান
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে দেশীয় ও অতিথি পাখি শিকারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফোরামের আয়োজনে গতকাল শনিবার পদ্মার তীরবর্তী ‘টি-বাঁধ’ ও পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর এলাকায় পালিত হয় উক্ত সচেতনতামূলক কর্মসূচীটি।
এতে রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের স্বেচ্ছাসেবীগণ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে পদ্মাপাড়ের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে পাখি শিকার রোধে সচেতনতামূলক ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়। উল্লেখ্য, শীতের আগমনে রাজশাহীতে পদ্মার চরসহ বিভিন্ন এলাকায় আসে অনেক অতিথি পাখি। সেই সাথে রয়েছে অনেক দেশীয় পাখি। একশ্রেণীর অসাধু মানুষ বিষটোপ ও কারেন্ট জাল দিয়ে হত্যা/শিকার করছে এসব পাখি।
পরবর্তীতে তা হাঁসের মাংস বলে রাজশাহীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করা হয়। এতে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে, অপরদিকে এসব মৃত পাখির বিষাক্ত মাংস খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বার্ড-ফ্লুসহ অন্যান্য বিভিন্ন জটিল রোগে। এর প্রেক্ষিতে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টির লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয় উক্ত কর্মসূচীর। উক্ত কর্মসূচী শেষে কাজীহাটায় অবস্থিত রাজশাহী মিশন হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ‘জীববৈচিত্র সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ এর পরিচালনায় এতে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র দাস। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ জালাল উদ্দিন সরদার, রাজশাহী মিশন হাসপাতালের সিইও প্রদীপ চাঁদ মন্ডল এবং বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক মোঃ হাসান আকতার। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. বিকে দাম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব তুলে ধরে তা সংরক্ষণে সকলের করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, পাখি পরিবেশের খাদ্য শৃঙ্খল ও খাদ্যজাল রক্ষা তথা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, ইঁদুর ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ সূচক বা বায়োলজিক্যাল ইন্ডিকেটর হিসেবে কাজ করে। ফুলের পরাগায়নে পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। পাখি উদ্ভিদের বীজ বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে; কিছু গাছের (বট, পাকুড়, ডুমুর ইত্যাদি) বীজ সহজেই পাখির পরিপাকতন্ত্রের সহায়তায় জন্মায়।











