ঢাকা | ডিসেম্বর ২১, ২০২৫ - ৫:৪২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

মোহনপুরে মাদ্রাসায় গোপন নিয়োগের অভিযোগ, বাধা দিলেন স্থানীয়রা

  • আপডেট: Sunday, December 21, 2025 - 12:14 am

মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বসন্তকেদার দারুচ্ছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসায় গোপনে নিয়োগের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের বাধা ও প্রতিবাদের মুখে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। অভিযোগে জানা গেছে, নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো রেজুলেশন করা হয়নি, নেই বৈধ নিয়োগ কমিটি। এমনকি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির সুপারিন্টেন্ডেন্টও অবগত ছিলেন না।

তা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন ব্যক্তি নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নেন। গতকাল শনিবার দুপুরে মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর বাজার সংলগ্ন ওই মাদ্রাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। গোপন নিয়োগের প্রতিবাদ ও স্বচ্ছ, নিয়মতান্ত্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার দাবিতে স্থানীয়রা প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিক্ষোভ করেন।

ঘটনাস্থলে দেখা যায়, নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা দুইজন পরীক্ষার্থী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও পরীক্ষা নেয়া হয়নি। তারা জানান, দুপুর ১২টায় পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও পরে জানতে পারেন, আগে থেকেই একজন প্রার্থীকে নির্ধারণ করে তাকে দুপুর ২টায় ডাকা হয়েছে। অপরদিকে পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা পরে আরো ২/৩ জন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে আসেন। জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে মাদ্রাসাটিতে “ল্যাব সহকারী” পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ৮টি আবেদন জমা পড়ে, যাচাই-বাছাই শেষে ৬ জনকে পরীক্ষার জন্য নির্বাচনের কথা থাকলেও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। এক পরীক্ষার্থী গণমাধ্যমকে অভিযোগ করে বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহিদ শরীফ উসমান হাদির মৃত্যুতে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক দিবসের দিন টাকার বিনিময়ে গোপন নিয়োগের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। তিনি মাদ্রাসার সভাপতি এশারুল হক, ক্রীড়া শিক্ষক হাসিম উদ্দিন মণ্ডল ও সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইসহাক আলীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন এবং অবিলম্বে নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানান।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি এশারুল হক বলেন, ডিজি অফিস থেকে প্রতিনিধি আসার কথা থাকলেও তিনি দেরিতে আসছেন। তবে নিয়োগ কমিটি ও রেজুলেশন সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। ক্রীড়া শিক্ষক হাসিম উদ্দিন মণ্ডলের বক্তব্যের সঙ্গেও সভাপতির বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার এসএম মাহমুদ হাসান জানান, নিয়োগের বিষয়টি মাদ্রাসার সহকারি সুপার আমাকে জানিয়েছিলেন, তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান এ বিষয়ে অবগত নেই-এমন তথ্য আমার জানা ছিল না। পরীক্ষা কেন্দ্রে বা ঘটনাস্থলে আসার পরে বিষয়টি আমি জানতে পারি। বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি অস্বচ্ছ ও বিশৃঙ্খল দেখে ফিরে আসি। মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহিমা বিনতে আখতার জানান, আমি মাত্র ১০ দিন আগে দায়িত্ব গ্রহণ করায় বিষয়টি আগে জানা ছিল না, মাদ্রাসার পক্ষ থেকেও আমাকে জানানো হয়নি। আমি যখন জানতে পেরেছি মাদ্রাসার বর্তমানে যিনি সহকারী সুপার তার সাথে কথা বলেছি এবং মাদ্রাসার সভাপতি সঙ্গেও কথা বলেছি। যেহেতু পরীক্ষাটি নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তাই আমি তাদের জানিয়েছি আপাতত পরীক্ষাটা বন্ধ রাখেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।