চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাকচাপায় ২ ভাই নিহত, পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর
সোনালী ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তরুণ দুই ভাই নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে জেলা শহরের সার্কিট হাউস মোড় এলাকায় সোনামসজিদ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়ক ৪ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় ট্রাফিক পুলিশ বক্স, ফাঁড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার জোড়বাগান মহল্লার আশরাফুল ইসলামের ছেলে সোহাগ আহমেদ (১৮) ও আজাইপুর পোলাডাঙ্গা মহল্লার শাহ আলমের ছেলে রিফাত আলী (১৮)। তারা সম্পর্কে একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে সার্কিট হাউস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই করছিল। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা সোহাগ ও রিফাতকে থামার সংকেত দেওয়া হলে তারা তা অমান্য করে দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে উঠে গেলে সোনামসজিদ থেকে আসা একটি চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন রিফাত। পরে গুরুতর আহত সোহাগকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
তবে পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, বিকালে রিফাত ও সোহাগ একটি মোটরসাইকেলযোগে সার্কিট হাউসের দিক থেকে আসছিল। এ সময় পুলিশের ধাক্কায় শাহীবাগ এলাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কে উঠতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে রিফাত এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় সোহাগ মারা যান।
ধাক্কা দেওয়ার বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, সার্কিট হাউস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ও থানা পুলিশ তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তদের ধাক্কা দেওয়া হয়নি। সেখানকার সিসি ক্যামেরার একটি ভিডিও ফুটেজ দেখলে স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।
এদিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের ভয়ে দ্রুত পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি মহাসড়কে উঠে দুর্ঘটনার শিকার হন রিফাত ও সোহাগ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহত রিফাতের লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিশ্বরোড মোড়ে সার্জেন্ট আতাউল ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও আসবাবপত্রে আগুন দেওয়া হয়। শান্তিবাগ এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর এবং একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়া উত্তেজিত জনতা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে রাখে। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী এসে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনএম ওয়াসিম ফিরোজ জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গেলে উত্তেজিত জনতা ধাওয়া দেয়। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। লাশ উদ্ধারের পর জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।









