রাজশাহী বিভাগে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে রাজশাহী সার্কিট হাউসে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বিভাগীয় কমিশনার ড. আ. ন. ম বজলুর রশীদ বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজশাহী বিভাগে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। তবে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার একটি চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। সভা শেষে বিভাগীয় কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আমাদের তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ এখানে নেই। ইতিপূর্বে অনেক নির্বাচন আমরা সুষ্ঠু-ভাল করেছি। এখানে সমন্বয়টা যেন জোরদার হয়, সেই বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। ওই ধরনের তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ রাজশাহী বিভাগে নেই। টুকটাক থাকলে সেটা আমরা সহজেই সমাধান করতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘এটি হবে ঐতিহাসিক নির্বাচন। এই ঐতিহাসিক নির্বাচনের যোগসূত্রে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা সবাই এ সভায় ছিলেন। আমরা সবার পরামর্শ শুনেছি। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে। এর কোনো ব্যাতায় আমরা হতে দেব না। পরে থানা-ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘অস্ত্র যেগুলো এখনও উদ্ধার করতে পারিনি, উদ্ধার যেগুলো হয় নাই; সেগুলো উদ্ধারের জন্য আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের যে অভিযান হয়েছে, সেখানে বেশকিছু উদ্ধার করেছি। কিন্তু যেগুলো খোয়া গেছে বা হারানো গেছে; সেগুলো উদ্ধার করা সত্যিকার অর্থে একটা চ্যালেঞ্জিং ইস্যু।’
তিনি বলেন, ‘সেই জায়গাগুলোকে আমরা চিহ্নিত করেছি। এজন্য আমরা জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দিয়েছে, তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা অভিযানটা পরিচালনা করব।’ এছাড়া যারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে পুলিশের কাছে প্রতীয়মান হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ চোরাকারবারী বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতারোধে নিয়মিতভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে টাক্সফোর্স অপারেশন চালানো হচ্ছে, যা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি এবং র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভাগের ৮ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনি সমন্বয় সভায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- ০১. প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় নিয়ম বর্হিভূত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও দখলকৃত ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এ কার্যক্রম প্রতিনিয়তই অব্যাহত থাকবে, ০২. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ চোরাকারবারী বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতারোধে নিয়মিতভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে টাক্সফোর্স অপারেশন চালানো হচ্ছে, যা অব্যাহত থাকবে ০৩. সাজাপ্রাপ্ত আসামি ধরা এবং চলমান ওয়ারেন্টগুলো দ্রুত তামিলসহ দাগী আসামিদের ধরার ক্ষেত্রে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর কার্যক্রম চলমান থাকবে। অবৈধ ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে এই অপারেশন কার্যকর ভূমিকা রাখবে, ০৪. উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে আচরণবিধি পালনের ক্ষেত্রে সকন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরসমূহের মধ্যে সার্বিক সমন্বয়ের জন্য জেলা কোর কমিটিসহ নির্বাচনি সমন্বয় সভা পরিচালনা করা হচ্ছে। সমন্বয়ের ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ প্রনয়ণপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হবে ০৫. আরচণবিধি প্রতিপালন, নির্বাচনি অপরাধ দমনে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রতি উপজেলায় ২ জন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে, ০৬. ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান এবং সর্বস্তরের নারী পুরুষ যাতে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেয় তার জন্য সর্বোক্ত প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে যথাসম্ভব সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ০৭. বিভাগে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার ন্যায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসাররা নিজ জেলার সব উপজেলার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সমন্বয় সভা করবেন ও বিভাগে প্রতিবেদন প্রদান করবেন এবং ০৮. গণভোট ও পোস্টাল ভোট বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলবে। এ বিষয়ে সরকারি টিভিসি ও প্রচার সামগ্রী যথাযথভাবে প্রচার করা হবে।










