রাজশাহীতে পেঁয়াজের বাজার অস্থির
স্টাফ রিপোর্টার: পেঁয়াজের দাম অস্থির হয়ে উঠেছে। দাম স্থায়ী না হয়ে ২/৩ দিন পরপর উঠানামা করছে। ২দিনের ব্যবধানে রাজশাহীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এতে সাধারণ ক্রেতারা হতভম্ব।
গতকাল শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীসহ এর উপকন্ঠের বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারগুলোতে গতকাল প্রতিকেজি পেঁয়াজ নতুন ৯০ থেকে ১ শ’ পুরাতন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ গত বুধবার প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ পুরাতন ৯০ থেকে ১০০, নতুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। হঠাৎ করে পেঁয়াজের এই দাম বৃদ্ধিতে সাধারন ক্রেতারা হতভম্ব হয়েছেন। তারা মনে করছেন বাজারে সঙ্কট না থাকলেও একটি সিন্ডিকেট পরিকল্পিত ভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন ক্রেতারা।
এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজারে আসতে শুরু করেছে হরেক রকম শীতের সবজি। এতে দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল বাজারে প্রতিকেজি ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০, বাধাকপি প্রতিপিস ৩০/৪০, সিম প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৪০ থেকে ৫০, আলু নতুন ৩০ থেকে ৫০, পুরাতন ২০ থেকে ২২, বেগুন ৭০, পটল ৫০, ঢেড়স ৪০, শশা ৮০, মিস্টি কুমড়া ৪০, প্রতিপিস লাউ ৪০, চাল কুমড়া ৪০, আদা ১০০, রসুন ১১০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া গতকাল মাছের দামও কিছুটা কমে প্রতিকেজি ছোটমাছ ২০০ থেকে ৪০০, সিলভার কার্প ১৩০ থেকে ১৮০, পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ২০০, রুই-কাতলা ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০, সোনালী ২৭০ থেকে ২৮০, দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭ ’শ থেকে ৭৫০, খাসির মাংস ৯’শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল প্রতিহালি সাদাডিম ৩৬ এবং লালডিম ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া গতকাল নগরীর কুমারপাড়ার চালের আড়ত গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারী বাজারে প্রতিকেজি গুটিস্বর্ণা ৫১/৫২, পারিজা/ লালস্বর্ণা ৫৮ থেকে ৬০, আটাশ ৭২, মিনিকেট ৮২, নাজির শাইল ৯৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গুটিস্বর্ণা ৫৩ থেকে ৫৪, পারিজা/ লালস্বর্ণা ৬০ থেকে ৬২, আটাশ ৭৪, মিনিকেট নতুন ৮৫, নাজির শাইল ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে আটা খোলা ৪৫ থেকে ৫০, প্যাকেট ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল প্রতিলিটার সয়াবিন খোলা ১৮০, বোতলজাত ১৯৮ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে রাজশাহীর বাজারে দেশি ও বিদেশি সব ধরনের ফল বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বাজারে মৌসুমি ফলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন বাজার সিন্ডিকেট ও খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দাম নেয়ার জন্য ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অনেক ফলের দামই কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে দেখা যায়, শীতকালীন দেশি ফলের মধ্যেও মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। জলপাই আজ কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আমলকী ২৫০ টাকা, সফেদা ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, পেয়ারা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি জাতের কমলা ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা এবং আতা ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের দাম কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে বিদেশি ফলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি কমলার দাম আজ কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, আপেল ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, মাল্টা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, নাশপাতি ৩২০ টাকা এবং বেদানা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের তুলনায় ফলের দাম এতটাই বেড়েছে যে নিয়মিত কিনতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, বাজারে যথাযথ তদারকি না থাকায় একটি বিশেষ মহল এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।









