ঢাকা | ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ - ৫:৪৫ পূর্বাহ্ন

পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

  • আপডেট: Saturday, December 13, 2025 - 12:24 am

স্টাফ রিপোর্টার: শীতের ভোরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আকাশে যখন কুয়াশা নেমে আসে, ঠিক তখনই দূরদেশের পরিযায়ী পাখিদের ডানার শব্দে ঘুম ভাঙে পুরো ক্যাম্পাসের। হিমেল বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসে অচেনা ভাষার কলতান।

সাইবেরিয়া, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার নীল আকাশ পেরিয়ে আসা অতিথি পাখিদের আগমন যেন উৎসবমুখর করে তোলে পুরো ক্যাম্পাস। প্রকৃতির নিজ হাতে সাজানো এই অনিন্দ্য দৃশ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিণত করে এক বিশাল পাখির অভয়ারণ্যে। যেখানে শীত মানেই রঙ, সুর আর উচ্ছ্বাসে ভরা এক প্রাণবন্ত মেলা।

গাছগাছালিতে মোড়া রাবি সারা বছরই মুখরিত থাকে অগণিত পাখির কলতানে। তবে শীতের সময়টা বছরের অন্য সময়ের চেয়ে একটু আলাদা। এসময় স্থানীয় পাখির পাশাপাশি দেখা মেলে দূরদেশ থেকে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী অতিথিদের।

প্রতিবছরের মতো এবারও রাবিতে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। তাদের আগমনধ্বনি মিলছে ক্যাম্পাসের নানা প্রান্তে, যেন প্রকৃতির নিজে হাতে সাজানো এক চঞ্চল, প্রাণবন্ত উৎসব। ক্যাম্পাসের জলাশয়গুলোয় আসা অধিকাংশ অতিথি পাখিই হাঁসজাতীয়। এদের মধ্যে ছোট সরালির উপস্থিতিই বেশি। আর বাকিদের মধ্যে রয়েছে বড় সরালি, ল্যাঞ্জা হাঁস, খুঁতে হাঁস, ঝুঁটি হাঁস ইত্যাদি। কয়েক বছর ধরে আসছে পেরেগ্রিন ফ্যালকন নামের আরেক পাখি। তারা প্রায় পাঁচ মাস এ ক্যাম্পাসে থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া, তাপসী রাবেয়া, রহমতুন্নেছা ও রোকেয়া হলের পেছনের পুকুর, শামসুজ্জোহা হলের পাশের জলাশয়সহ বিভিন্ন স্থানে বসেছে পরিযায়ী পাখির মেলা। দিনভর তারা উড়ে বেড়াচ্ছে খোলা আকাশে, কখনো জলাধারে নেমে করছে জলকেলি। তাদের এ উদযাপন উপভোগ করতে প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা।

পাখি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আমিনুজ্জামান মো. সালেহ্ রেজা বলেন, নভেম্বরের শেষ দিকে পাখিগুলো এখানে আসে। আগের বছরের চেয়ে এবার পাখির সংখ্যা বেশি। তবে তার অভিযোগ, অনেকেই ঢিল ছুঁড়ে উড়ন্ত পাখির ছবি তুলছে। এতে পাখিরা বিরক্ত হচ্ছে। পাখিদের অভয়ারণ্য না দিতে পারলে তারা আর আসবে না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে পাখি হত্যা নিষিদ্ধ। তাদের কোনো ধরনের ভয়-ভীতি দেখানো হয় না। পরিযায়ী পাখির অবাধ বিচরণে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।