রাজশাহীতে আমনের দরপতনে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে আমনের ভরা মৌসুমে ধানের দরপতনে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। এদিকে কৃষকদের ধানের নায্যমুল্য নিশ্চিতে সরকার ধান-চাল ক্রয় শুরু করেছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রতিনিধিরা জানান, রাজশাহীর তালন্দ, কালীগঞ্জ, চৌবাড়িয়া, কলমা ও বিল্লি হাটে কৃষকেরা বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি করছেন ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। এই দামে ধান বিক্রি করে কৃষকরা উৎপাদন খরচ উঠাতে পারছেননা।
তানোর উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকার কৃষক আবু বকর বলেন, এখনো কিছু জমির ধান কাটা বাকি। শ্রমিক ও সারের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম। মণ প্রতি ১,১০০ টাকায় ধান বিক্রি করলে লোকসান ছাড়া কিছুই থাকে না। তবে খড়ের ভালো দাম থাকায় কিছুটা খরচ ওঠে আসছে বলে জানান তিনি।
খাদ্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর জানায়, কৃষকদের ধানের নায্যমুল্য নিশ্চিতে সরাকার গত নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ থেকে ধান-চাল ক্রয় শুরু করেছে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এবার সরকার রাজশাহীতে ৩৪ টাকা কেজি দরে ৯৫৪ মেট্রিক টন ধান ও ৫০ টাকা কেজি দরে ৬ হাজার ৩৯১ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করবে। সারা দেশে ক্রয় করবে ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধান, ৬ লাখ মেট্রিকটন সেদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার মেট্রিকটন আতব চাল। এই ধান-চাল ক্রয় পুরোদমে শুরু হলে বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধিপাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ মৌসুমে জেলায় ৮৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে, যেখানে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন। গত বছর চাষ হয়েছিল ৮৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে, উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৩২৩ মেট্রিক টন। বর্তমানে প্রায় ৯৫ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
কৃষিবিদরা বলছেন ধানের সরবরাহ বাড়ার কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে। মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি ক্রয় কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা যাতে সহজে ক্রয়কেন্দ্রে ধান দিতে পারেন সে বিষয়েও নজরদারি করা হচ্ছে। জেলার খাদ্যগুদাম গুলোতে ধান- চাল ক্রয় পুরোদমে শুরু হলে বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে।











