ঢাকা | ডিসেম্বর ৮, ২০২৫ - ৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

নাবিল গ্রুপের পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

  • আপডেট: Monday, December 8, 2025 - 12:44 am

গোদাগাড়ী প্রতিনিধি: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট রিশিকুল ইউনিয়নে লোকালয়ে অবস্থিত নাবিল গ্রুপ কর্তৃক পরিচালিত নাবা পোল্ট্রি ফার্ম লিমিটেড নামক এক লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির ফার্মের বর্জ্যের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।

পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে লোকালয়ে গড়ে ওঠা এই কোম্পানির বর্জ্য নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী খাল, ফসলি জমিতে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল ও মাটির গুণাগুণ।

পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন। এ ছাড়া সৃষ্ট দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে দূষিত হচ্ছে বায়ুমণ্ডল, যার ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের ঝিকড়াপাড়া গ্রামের লোকালয়ের মাঝখানে গড়ে ওঠা ফার্মের বর্জ্য ফেলার নেই কোনো আধুনিক ব্যবস্থা। ফলে এলাকার মানুষ পরিবেশ দূষণের মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এতে দূষিত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বৃষ্টির পানিতে ফার্মের বর্জ্য মিশে আশপাশে এলাকার পানি দূষিত হয়ে কালচে আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে এসব জমিতে চাষাবাদ ও পুকুর-জলাশয়ে মাছ চাষ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া বায়ু ও পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

স্থানীয়রা জানান, এ ফার্ম থেকে প্রতিদিন শত-শত কেজি বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় তারা এসব বর্জ্য রাতের আধারে কথায় গিয়ে ফেলে আসে জানা নেই। এসব বর্জের কারণে পোল্ট্রি ফার্মের আশেপাশের শত শত পথচারী ও এলাকার মানুষ দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

ঝিকড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা চান মিয়া বলেন, এই পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্যের দুর্গন্ধে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ যখন থাকে না তখন জেনারেটর মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ পরিচালনা করে জেনারেটরের কম্পন আওয়াজে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে যায়। বিকাল হলেই দুর্গন্ধ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়।

ফলে সূর্য ডোবার আগে ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘরে ঢুকে যেতে হয়। অভিযোগ করলে কর্তৃপক্ষের লোকেরা আমাদেরকে ভয়ভীতি সহ হুমকি দেখান।

একই গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, দুর্গন্ধে আমরা নিঃশ্বাস নিতে পারি না। বৃষ্টির পানিতে ফার্মের ভেসে ময়লা আবর্জনা আমাদের জমিতে মিশে যায়। এতে চরম অশান্তিতে আছি। বাসায় মেহমান এলে চরম লজ্জায় পড়তে হয়। দুর্গন্ধে খাবার খেতে গিয়ে বমি করে দেন ছোট বাচ্চারা। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাবা পোল্ট্রি ফার্ম লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার সোহাগ আলী বলেন, আমরা ফার্মের বর্জ্য দিয়ে জৈব সার তৈরি করে নিচ্ছি। যদি এমন কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের জানাতে হবে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।